
লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে দুর্যোগ মোকাবেলায় যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ ও জনবল প্রস্তুত রাখা হলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে সেই দপ্তর যে কতটা অকার্যকর, তার জ্বলন্ত উদাহরণ দেখা গেল চাকমাঘাটে। জাতীয় সড়কে ঘটে যাওয়া এক লরির দুর্ঘটনায় আহত চালককে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা পরও জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর। অবশেষে দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চালকের।স্থানীয়দের অভিযোগ, মহকুমা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং দুর্যোগ মোকাবেলা দপ্তরের অদক্ষতার কারণেই এই করুণ পরিণতি ঘটেছে। শত শত মানুষের চোখের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন দুর্ঘটনাগ্রস্ত লরির চালক।ঘটনার সূত্রপাত গতকাল গভীর রাতে, আনুমানিক আড়াইটা নাগাদ। ধর্মনগর থেকে আগরতলাগামী একটি সিমেন্ট বোঝাই লরি চাকমাঘাট এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। লরির সামনের অংশ চেপে বসায় চালক তথা মালিক মিহির লাল দেবনাথ গাড়ির ভেতরে আটকে পড়েন। আহত চালক তখন অসহায়ভাবে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। স্থানীয়রা দ্রুত কর্তৃপক্ষকে খবর দিলেও বাস্তবিক সহায়তা মিলতে শুরু করে বহু দেরিতে।প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কিছু কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাদের আনা যন্ত্রপাতি ছিল কার্যত অকেজো। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা ও কার্যকরী তৎপরতার অভাবে শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারান মিহির লাল দেবনাথ।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একাধিকবার ফোন করেও আগুন নেভানোর দপ্তর, এনডিআরএফ বা বিশেষ উদ্ধারকারী দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো যায়নি। সামান্য কিছু জনবল ও অকেজো যন্ত্রপাতি নিয়ে যে ‘মহড়া’ হয়, তা আদতে দুর্যোগের সময় কতটা ব্যর্থ তা আবারও প্রমাণিত হলো।তবে এই দুঃসময়ে টিএসআর-এর ১২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কিছু সদস্য সাহসিকতা ও মানবিকতার পরিচয় দিয়ে উদ্ধারকার্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁদের ভূমিকা ইতিবাচকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।এই ঘটনা প্রশাসনিক ব্যর্থতার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা হয়ে রইল।