
ত্রিপুরার ক্রীড়াঙ্গনে নতুন গর্বের পালক যুক্ত হলো। রাজ্যের ক্রীড়া সংগঠক, প্রাক্তন বডিবিল্ডার ও প্রশিক্ষক তনয় দাস আগামী ৫৭তম এশিয়ান বডিবিল্ডিং অ্যান্ড ফিজিক স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-এ আন্তর্জাতিক বিচারকের (International Judge) দায়িত্বে থাকছেন। মর্যাদাপূর্ণ এই প্রতিযোগিতা আগামী ১৮ থেকে ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। এতে এশিয়ার বহু দেশের শীর্ষস্থানীয় বডিবিল্ডাররা অংশ নেবেন।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের অফিসিয়েটিং প্যানেলে স্থান পাওয়া এক কঠিন কাজ। দেশের পক্ষ থেকে এই বছরের প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্বে থাকবেন মাত্র দুইজন—ত্রিপুরার তনয় দাস এবং ওড়িশা রাজ্য সংস্থার সভাপতি সুমিত্রা ত্রিপাঠী। এই সুযোগ পাওয়া শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং ভারতের ক্রীড়াজগতের জন্যও একটি বড় সম্মান।
ত্রিপুরা থেকে বিশ্বমঞ্চে
তনয় দাস শুধু একজন প্রাক্তন প্রতিযোগী নন, তিনি ত্রিপুরা বডি বিল্ডারস অ্যান্ড ফিটনেস অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে রাজ্যের অসংখ্য তরুণ খেলোয়াড় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পদক জিতেছেন। ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন, সঠিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
বিশ্ব বডিবিল্ডিং ও ফিজিক ক্রীড়াক্ষেত্রে বর্তমানে একমাত্র বাংলাভাষী আন্তর্জাতিক জাজ হলেন তনয় দাস। এটি বাংলাভাষী ক্রীড়া মহল এবং বিশেষ করে ত্রিপুরার জন্য গর্বের বিষয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিচারকের আসনে বসা মানে শুধু উপস্থিতি নয়; এটি খেলাধুলার মান, নিয়ম মেনে চলা এবং ন্যায়সঙ্গত ফল নিশ্চিত করার দায়িত্ব বহন করে। এজন্য প্রয়োজন দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ, এবং বিশ্বমানের জ্ঞান। তনয় দাসের এই নির্বাচিত হওয়া প্রমাণ করে যে তাঁর অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্বীকৃত।
এই সাফল্য ত্রিপুরার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস। ছোট রাজ্য থেকে উঠে এসে বিশ্বমানের স্বীকৃতি অর্জন করা প্রমাণ করে—প্রতিভা, অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রম থাকলে সাফল্যের শিখরে পৌঁছানো সম্ভব। স্থানীয় ক্রীড়াবিদরা মনে করছেন, এই অর্জন তাদের জন্য স্বপ্ন দেখার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
আগস্টে ঐতিহাসিক মুহূর্ত
আগামী আগস্টে ব্যাংককে যখন তনয় দাস বিচারকের আসনে বসবেন, তখন শুধু ত্রিপুরার নয়, ভারতের পতাকাও গর্বের সাথে উড়বে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। এটি রাজ্যের দীর্ঘদিনের ক্রীড়া প্রচেষ্টা ও অঙ্গীকারের প্রতিফলন।