বাংলাদেশের প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য প্রদ্যুৎ কিশোর দেব বর্মনের
বাংলাদেশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক উত্তেজনার আবহে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ত্রিপুরার রাজনীতিক প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা।
সম্প্রতি চিন সফরে বাংলাদেশের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা ইউনুস, উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এই রাজ্যগুলো স্থলবেষ্টিত, তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও উপায় নেই। আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।”
এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রদ্যোৎ। তাঁর অভিযোগ, এমন মন্তব্য ভারতের সার্বভৌমত্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ইউনুসের মতো কয়েকজন নেতার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, তারা আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে আবার অস্থিতিশীল করতে চায়।
এর আগেও প্রদ্যোৎ দাবি করেছিলেন, ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন। তাঁর মন্তব্য, “ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে দেওয়া। ওই অঞ্চলে এখনও লক্ষ লক্ষ ত্রিপুরী, গারো, খাসি এবং চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে যারা বাংলাদেশের মধ্যে কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছে।”
প্রদ্যোৎ আরও বলেন, “আমরা আর এই অকৃতজ্ঞ শাসনের উপর নির্ভরশীল নই। ভারতের উচিত নিজেদের স্বার্থে চিন্তা করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে নতুনভাবে কৌশল নির্ধারণ করা।”
ইউনুসের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারতের অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ‘চিকেনস নেক করিডোরে’ পরিকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু প্রদ্যোতের বক্তব্য আরও চরম। তিনি বলেন, “কোটি কোটি টাকা ব্যয় না করে বরং বাংলাদেশ ভেঙে আমাদের নিজস্ব সমুদ্রপথ তৈরি করা উচিত।”
এইসব মন্তব্য কেবল রাজনৈতিক বিতর্কই নয়, বরং ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক নতুন মোড়ের ইঙ্গিত। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের ইতিহাস এবং বর্তমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে যে বক্তব্য উঠে এসেছে, তা দুই দেশের মধ্যে সংবেদনশীলতার মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এখন দেখার, এই বিতর্ক কতদূর গড়ায়, এবং দুই দেশের সরকার এই স্পর্শকাতর ইস্যুতে কী পদক্ষেপ নেয়।
Post Comment