পুজোর ছুটিতে এবারে ঘুরতে আসার এক অন্যতম স্থান একান্ন পীঠের ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির।*
নিজস্ব প্রতিনিধি : ত্রিপুরা : প্রিয়াংকা বনিক : ৪ অক্টোবর
ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির যা দেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির একান্ন পীঠের অন্যতম এক পীঠ। আগামীতে মন্দিরের পরিকাঠামোগত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এটি সারা দেশের মধ্যে অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এই মন্দির ঘিরে এলাকার আর্থ সামাজিক অবস্থারও উন্নতি হবে। মাতৃপক্ষের শুরুতে উদয়পুরের মাতাবাড়ি মন্দির চত্বরে আয়োজিত ত্রিপুরা সুন্দরী উৎসব – ২০২৪ এর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।মহারাজা ধান্য মাণিক্য 1501 সালে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কথিত আছে যে তিনি আসলে ভগবান বিষ্ণুর জন্য মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন, কিন্তু পরে তার স্বপ্নে একটি উদ্ঘাটনের কারণে, তিনি মাতা ত্রিপুরাসুন্দরীর মূর্তিটি বহন করেছিলেন যা দিয়ে তৈরি। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে কাস্তি পাথর এনে মন্দিরে স্থাপন করেন। এটিকে 51টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, পীঠস্থান হল সেই স্থানগুলি যেখানে দেবী সতীর দেহের অংশ পতিত হয়েছে। “পিঠামালা গ্রন্থ” অনুসারে, ভগবান শিবের তান্ডব নৃত্যের সময় সতীর ডান পা এখানে পড়েছিল। এই সমস্ত তথ্য মন্দিরের পাণ্ডুলিপি থেকে সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এসব পাণ্ডুলিপি ধ্বংস হয়ে গেছে।দেবী ত্রিপুরা সুন্দরীর মূর্তি কাস্তি পাথর দিয়ে তৈরি যা লালচে কালো রঙের। প্রতিমাটি 1.57 মিটার। দীর্ঘ এবং .64 mtr প্রস্থ এবং একটি পাথরের প্ল্যাটফর্মে ইনস্টল করা হয়েছে। দেবী ত্রিপুরা সুন্দরীর 4টি হাত, মুখটি একটু লম্বা, এবং চোখ তুলনামূলকভাবে ছোট, ভগবান শিবের বুকে দাঁড়িয়ে আছে, সোনার মুকুট পরা এবং একটি গ্রিডলক রয়েছে।মাতৃপক্ষের শুরুতে উদয়পুরের মাতাবাড়ি মন্দির চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির আমাদের জন্য একটা আস্থার বিষয়। সারা ভারতবর্ষ সহ উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ দীপাবলির সময়ে এখানে আসেন। এছাড়া অনেকে ঘুরতেও আসেন। ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও সারা দেশে সমাদৃত হয়েছে মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির। তাই প্রতিনিয়ত মানুষ এখানে আসছেন। মহালয়ার পূণ্যলগ্নে এধরণের একটা অনুষ্ঠান সত্যিই আনন্দের। এতে ভক্তিভাব ও আমাদের পরম্পরার মিশ্রণ এবং সনাতন ঐতিহ্যকে ধরে রাখার মেলবন্ধন তৈরি হবে। যে শিল্পীরা উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন নিশ্চয়ই তারা তাঁদের প্রতিভা মেলে ধরবেন। এছাড়া ও তিনি প্রসাদ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি এই মন্দিরের উন্নয়নে আর্থিক বরাদ্দ করেছেন। প্রায় ৩৭ কোটি টাকার অধিক আর্থিক প্রকল্প দিয়ে সহায়তা করেছেন তিনি। ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের সার্বিক উন্নয়নে কিছুদিন আগে ট্রাস্টের বৈঠক হয়েছে। আর সেই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আমি নিজেই। বৈঠকে নতুনভাবে গড়ে উঠা মন্দিরের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে সেনিয়ে আলোচনা হয়।নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার খুব সহসাই কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দিয়েছেন। আর যখন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে তখন এটা সারা দেশের মধ্যে অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এটাকে সামনে রেখে আশপাশ এলাকায় হোটেল থেকে শুরু করে দোকানপাটও বাড়বে। এতে আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। এই মন্দিরের নতুন পরিকাঠামো শুরু হওয়ার আগে ২০১৮i সালের ৭ জুন ভারতের পূর্বতন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।এদিন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা সবাইকে দুর্গাপুজোর আগাম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
Post Comment