
ত্রিপুরার মহারাজগঞ্জে গড়ে উঠছে আধুনিক মাছ বাজার
ত্রিপুরার অন্যতম বৃহৎ মাছের বাজার মহারাজগঞ্জে শুরু হচ্ছে এক অত্যাধুনিক তিনতলা বিশিষ্ট মাছ বাজার নির্মাণের কাজ। রাজ্যের মৎস্য ও তফসিলি জাতি কল্যাণ বিভাগের মন্ত্রী সুধাংশু দাস জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে মোট ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে, যার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৭.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।
মন্ত্রী বুধবার বাজার এলাকা পরিদর্শনের পর এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “এই বাজারে বেশিরভাগ মাছ বিক্রেতাই তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের। তাই তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পটি গৃহীত হয়েছে।”
নতুন ভবনটিতে থাকবে আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা, ঠান্ডা ঘর, যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ও গ্রাহকসুবিধাজনক পরিবেশ। নির্মাণের দায়িত্বে থাকবে মৎস্য বিভাগের প্রকৌশল শাখা।
এছাড়া, স্থানীয় জাল ধরা মাছ বাজারে আনতে ডুম্বুর হ্রদের মাছ বিক্রির জন্য অ্যাপেক্স ফিশারিজ লিমিটেডের মাধ্যমে একটি নতুন স্টল চালুর কথাও জানান মন্ত্রী।
এই উদ্যোগ রাজ্যের মৎস্য বাজারে কাঠামোগত উন্নয়ন এবং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক অগ্রগতি
সম্প্রতি মহারাজগঞ্জ বাজার এলাকায় কাজ পরিদর্শনে যান মন্ত্রী সুধাংশু দাস। তিনি জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাজারের পুরনো নিকাশি সমস্যা, জলাবদ্ধতা, যানজট এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ মুক্তি পাবেন। নতুন ভবনে থাকবে উন্নত নিকাশি ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, যা বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ের জন্যই আরামদায়ক হবে।
মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এই প্রকল্প কেবল একটি আধুনিক বাজার গড়ে তোলাই নয়, বরং ত্রিপুরার মৎস্য শিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অন্যতম পদক্ষেপ। পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মাছ বাজারকেও ধাপে ধাপে আধুনিক অবকাঠামো দিয়ে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে শুধু স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই নয়, রাজ্যের হাজার হাজার মৎস্যজীবীও অর্থনৈতিকভাবে আরও নিরাপদ হবেন।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এতদিন পুরনো বাজারে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হত। বিশেষত বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা, দুর্গন্ধ ও স্যানিটেশন সমস্যার কারণে বাজারের পরিবেশ খারাপ হয়ে যেত। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু বাজারের আধুনিকীকরণই হবে না, বরং ক্রেতাদের আস্থা ও ব্যবসার পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে বলে তারা আশা করছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহারাজগঞ্জ বাজারে আধুনিক বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি হবে। সরকার বিশ্বাস করছে, এই ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এবং গ্রামীণ উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।