বিরাট প্ল্যানিং ইজরায়েলের! তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি। হিজবুল্লাকে নিকেশ করতে ব্লু প্রিন্ট তৈরি*
নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রিয়াংকা বনিক : ২৬ সেপ্টেম্বর বর্বর আর নৃশংস হামলায় একের পর এক প্রাণনাশের নজির গড়ছে ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া’ খ্যাত এই দেশ। অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে বৈরুতে। বিগত কয়েকদিনে, ক্রমাগত জঙ্গি এবং ওয়াকি-টকি হামলায় নাজেহাল হিজবুল্লা ও লেবাননের মানুষ। সারা দেশের মানুষ এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।ক্রমাগত জঙ্গি এবং ওয়াকি-টকি হামলায় নাজেহাল হিজবুল্লা ও লেবাননের মানুষ। সারা দেশের মানুষ এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। এখন ইজরায়েল এই যুদ্ধকে চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা করছে। ইজরায়েল ইতিমধ্যে হিজবুল্লার বিভিন্ন ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়ে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এখন ইজরায়েল হিজবুল্লার মোকাবিলা কড়া হাতে করার চেষ্টা চালাচ্ছে।জাতিসংঘ মহাসচিব বারংবার বলছেন, যেন লেবানন আরেকটি ‘গাজা’ হয়ে না ওঠে। তবে তার কথাই যেন সত্যি হলো। গাজায় এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে ইসরাইল। লেবাননেও একই কায়দায় নিরীহ মানুষ হত্যা করা করছে দেশটি। এদিকে ইজরায়েল তার সেনাকে লেবাননে হিজবুল্লার বিরুদ্ধে স্থল হামলার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে বলে খবর রয়েছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফের প্রধান সেনাদের উদ্দেশ্যে এসব নির্দেশ দিয়েছেন। সেনাপ্রধানের এই নির্দেশের পর মনে করা হচ্ছে, যে কোনো সময় ইজরায়েল হিজবুল্লার দিকে এগোতে পারে।গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর ওয়াকি-টকি ও পেজার বিস্ফোরণের মাধ্যমে লেবাননে ‘সুকৌশলে’ মানুষ হত্যা করেছে ইসরাইল। এরপরই কৌশল বাদ দিয়ে সরাসরি মাঠে নেমেছে মানুষখেকো এ হায়েনার দল। গত ২০ অক্টোরব থেকে দেশটিতে পুরোদমে হামলা শুরু করে ইসরাইল। মাত্র এক সপ্তাহের কম ব্যবধানে ৬২০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বোমা, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার ইসরাইলকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে— হামলা থামবে না, চলবে। দেশটির উত্তর সীমান্তে ইজরায়েলি সেনার উদ্দেশে সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি বলেছেন যে ‘লেবাননে প্রবেশের জন্য এবং হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করার জন্য স্থল প্রস্তুত করার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বিমান হামলা চালানো হয়েছিল।’তিনি বলেছিলেন যে ‘উত্তর ইজরায়েলের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্য অর্জনের জন্য, আমরা একটি কৌশল প্রক্রিয়া প্রস্তুত করছি।’ এদিকে, সোমবার ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানায় যে তারা লেবাননে হিজবুল্লার লক্ষ্যবস্তুতে প্রায় ৩০০টি হামলা চালিয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে। ইজরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে বলেছে যে জেনারেল স্টাফ আইডিএফ সদর দফতরের ভূগর্ভস্থ অপারেশন সেন্টার থেকে লেবাননে হিজবুল্লার লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অনুমোদন দিয়েছে।এর আগে, ইজরায়েলি সামরিক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন যে সকালে প্রায় ১৫০টি হামলা হয়েছে। এসব হামলার পরপরই লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি সোমবার পূর্ব ও দক্ষিণ লেবাননে ইজরায়েলি হামলাকে ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা বলে নিন্দা করেছেন। মিকাতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন যে লেবাননে চলা ইজরায়েলি আগ্রাসন একটা ধ্বংসের যুদ্ধ এবং লেবাননের গ্রাম ও শহরগুলিকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে একটি ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা। এ সময় তিনি ইজরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ, সাধারণ পরিষদ ও প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।এদিকে দেশটিতে স্থল অভিযান করার পরিকল্পনা করছে ইসরাইল। ইসরাইলের একটি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম বলেছে, লেবাননে সম্ভাব্য স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, লেবাননে স্থল অভিযান চালাতে মহড়া চালাচ্ছেন সেনারা।অর্থাৎ লেবাননে মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে। আর সহজেই বা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই এ যুদ্ধ থামার ইঙ্গিত নেই।
Post Comment