
দেশের রাজনৈতিক দলগুলির তালিকা থেকে ৩৩৪টি দলকে বাদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ECI)। এরা নথিভুক্ত থাকলেও, রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে গত ছয় বছরে অন্তত একটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারায় এই দলগুলির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
কার্যালয় বন্ধের নির্দেশ
তালিকা থেকে বাদ যাওয়া Registered Unrecognised Political Parties (RUPP)-এর দেশের কোথাও দলীয় কার্যালয় চালানোর অনুমতি থাকবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই দলগুলি ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিল।
বাদ পড়া ৩৩৪টি দলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের রয়েছে সাতটি—
১) অল ইন্ডিয়া তফসিলি ইউনাইটেড পার্টি
২) বঞ্চিত স্বরাজ পার্টি
৩) বাংলা বিকাশবাদী কংগ্রেস
৪) ভারতীয় নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি
৫) ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট পার্টি (প্রবোধ চন্দ্র)
৬) ইন্ডিয়ান ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেস
৭) ইন্ডিয়ান পিপল’স ফরওয়ার্ড ব্লক
ভোটমুখী বিহারের ১৭টি দলও তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— ভারতীয় ব্যাকওয়ার্ড পার্টি, দেশি কিসান পার্টি, লোক আওয়াজ দল, ন্যাশনাল জনতা পার্টি (ইন্ডিয়ান), রাষ্ট্রবাদী সর্বোদয় পার্টি, প্রভৃতি।
এখন দেশে মোট নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ২,৮৫৪ থেকে কমে হয়েছে ২,৫২০। বর্তমানে রয়েছে ৬টি সর্বভারতীয় দল ও ৬৭টি আঞ্চলিক দল। চলতি বছরের জুনেই কমিশন এই তালিকা ছাঁটাই শুরু করেছিল। প্রাথমিকভাবে ৩৪৫টি দলের ওপর তদন্ত চালানো হয়, যার মধ্যে ৩৩৪টি বাদ যায়।
২০০১ সাল থেকে এর আগেও একাধিকবার তালিকায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্ট আগে জানিয়েছিল, কমিশনের কোনও রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি প্রত্যাহারের ক্ষমতা নেই। তাই কমিশন আইনি জটিলতা এড়াতে নথিভুক্তি বাতিলের পথ বেছে নিয়েছে। অনেক দলের বিরুদ্ধে অতীতে করফাঁকি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগও উঠেছিল।
আইন অনুযায়ী বাধ্যবাধকতা
১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯এ ধারা অনুযায়ী, যেকোনও রাজনৈতিক দলকে প্রথমে নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত হতে হয়। তালিকাভুক্ত দলগুলি কর ছাড়সহ কিছু বিশেষ সুবিধা পায়। তবে তালিকা থেকে বাদ যাওয়া দলগুলি এখন আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাওয়া যাবে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে।