×

অবসর নিলেন রাজ্যের সোনার মেয়ে দীপা, বিষাদের সুর ভক্তদের মনে*

অবসর নিলেন রাজ্যের সোনার মেয়ে দীপা, বিষাদের সুর ভক্তদের মনে*

নিজস্ব প্রতিনিধি :ত্রিপুরা :প্রিয়াংকা বনিক : ৭ অক্টোবর

আচমকা জিমনাস্টিকসকে বিদায় জানালেন দীপা কর্মকার। সমাজমাধ্যমে নিজের অবসরের কথা জানিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা জিমন্যাস্ট। জানিয়েছেন, বছরের শুরু থেকেই অবসরের কথা ভাবছিলেন। ২০১৬-র রিয়ো অলিম্পিক্সে জিমন্যাস্টিক্সে মহিলাদের ভল্ট ইভেন্টে অল্পের জন্য পদক জিততে পারেননি। তাঁর প্রোদুনোভা ভল্ট সে সময় নজর কেড়েছিল।আমেরিকান এবং রাশিয়ানদের দাপট ছিল এতদিন। সেই দুনিয়ায় কোনও এক ভারতীয় যে প্রবল ভাবে পা রাখতে পারেন, বিশ্বাসই ছিল না। অবিশ্বাসকে তীব্র আত্মবিশ্বাস দিয়ে বিস্ময়ে পরিণত করেছিলেন দীপা কর্মকার (Dipa Karmakar)। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে প্রদুনোভা ইভেন্টে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া করেন।৩১ বছরের জিমন্যাস্ট প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।দীপা তাঁর বার্তায় লিখেছেন, ”অনেক সিদ্ধান্ত করে জিমন্যাস্টিক্স থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক দমই সহজ ছিল না সিদ্ধান্ত নেওয়া। তবে এটাই সঠিক সময়। জিমন্যাস্টিক্স আমার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

Bhut Jolokia Pickle

প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। কখনও সাফল্য পেয়েছি, কখনও ব্যর্থ হয়েছি।”অবসরের সময় দীপার মনে পড়েছে জিমন্যাস্টিক্স শুরু করার সময়ের একটি ঘটনা। তিনি লিখেছেন, ”পাঁচ বছর বয়সে শুরু করার সময় এক জন বলেছিলেন, আমি কখনও জিমন্যাস্ট হতে পারব না। কারণ আমার পায়ের পাতা সমান। যে টুকু সাফল্য পেয়েছি, তার জন্য আমি গর্বিত। বিশ্ব মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা, পদক জেতা এবং ২০১৬ সালের রিয়ো অলিম্পিক্সে প্রোদুনোভা ভল্ট মারতে পারা আমার জিমন্যাস্টজীবনের সব চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা। আমার সেই দীপাকে এখন দেখে গর্ব হয়, যে সাহসের সঙ্গে স্বপ্ন দেখেছিল।”এ বছরই এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ভল্ট থেকে সোনা এনেছেন। চোটের জন্য দীর্ঘদিন জাতীয় টিমের বাইরেs ছিলেন। নির্বাসনের কারণে প্রায় ২ বছর নামতে পারেননি ফ্লোরে। তবুও দীপা ভারত তো বটেই, এশিয়ান জিমন্যাস্টিক্সে অন্যতম সেরা অ্যাথলিট। অলিম্পিকের আগে নির্বাসন থেকে ফিরে জাতীয় সেরা হয়েছিলেন। তাও প্যারিস অলিম্পিকের টিমে জায়গা করতে পারেননি। সেই আক্ষেপ বোধহয় অবসেরর দিকে ঠেলে দিল দীপাকে। ত্রিপুরার ৩১ বছরের মেয়ে বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না। অনেক ভেবেচিন্তে তবেই এই জায়গায় এসে পৌঁছতে পেরেছি। এটাই সেরা সময়। জিমন্যাস্টিক্স থেকে অবসর নিচ্ছি। এই ক’বছরে দেশের হয়ে পারফর্ম করা আমার কাছে সবচেয়ে তৃপ্তির বিষয় ছিল। যতটা সুযোগ পেয়েছি, কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।’ভুল বলেননি দীপা। দেশের হয়ে যে ইভেন্টেই নামুন না কেন, নিজের সেরাটাই দিয়েছেন। ২০১৪ সালে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমস থেকে উত্থান। ভল্টে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন দেশের হয়ে। ২০১৫ সালে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের ২টো ইভেন্ট থেকে এসেছিল সোনা ও ব্রোঞ্জ। তবে দীপা চিরকাল মনে থাকবেন প্রদুনোভার মতো কঠিন ইভেন্টকে বেছে নেওয়ার জন্য। দীপা বলেছেন, ‘আমার পায়ের পাতা ফ্ল্যাট। অনেকেই বলেছিলেন, এরকম পা নিয়ে জিমন্যাস্ট হওয়া যায় না। আমি লোককে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছিলাম। যে স্বপ্ন আমি দেখেছি, সেটা পূরণ করতে পেরেছি। ওই সময়গুলো যখন ফিরে দেখি, দীপার জন্য আমার সত্যিই গর্ব হয়।’

Post Comment

You May Have Missed