
রাজ্যে বিদ্যুতের সমস্যা মিটছে না, কখনো স্মার্ট মিটার কখনো বা বিলের জ্বালায় অতিষ্ঠ রাজ্যবাসী তারই মধ্যে আবারো এক নতুন কেলেঙ্কারির খবর উঠে আসলো সামনে। উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর মহকুমার কদমতলা ব্লকের কালাগাঙ্গের পার গ্রাম পঞ্চায়েতের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভিতরগুল এলাকায় বিদ্যুৎ বিল আত্মসাতের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কদমতলা বিদ্যুৎ সাব-স্টেশনের এক অনিয়মিত বেসরকারি কর্মী, জহুর উদ্দিন, গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের নাম ভাঙিয়ে।
সম্প্রতি এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ ক্যাবল বসানোর কাজ চলে। একই সময়ে, বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বহু গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, জহুর উদ্দিন ওই সব গ্রাহককে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে বিল জমা দেওয়ার নাম করে টাকা নেন। প্রায় ৪০-৫০টি পরিবার তাঁর হাতে টাকা তুলে দিলেও অধিকাংশই কোনও রশিদ পাননি এবং সংযোগও পুনরায় চালু হয়নি।
স্থানীয়দের দাবি, জহুর উদ্দিন প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা সংগ্রহ করেছেন, কিন্তু সেই অর্থ কদমতলা বিদ্যুৎ দপ্তরে জমা পড়েনি। ফলে অন্তত আট-দশটি পরিবার প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, যদিও তারা সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করেছেন। তীব্র গরমের মধ্যে অন্ধকারে কাটছে দিন, বিপাকে পড়েছে এলাকার কচিকাঁচারাও।
ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা জানান, একাধিকবার জহুর উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও সুরাহা মেলেনি। পরে তারা সরাসরি কদমতলা বিদ্যুৎ দপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন ও যথাযথ রশিদ প্রদানের দাবি তোলেন। কিন্তু ঘটনাটির বিষয়ে দপ্তরের সিনিয়র ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, এই ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং মারপিটের ঘটনাও ঘটে গেছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কদমতলা থানায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে জহুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং স্থানীয়রা দ্রুত দোষীদের শাস্তি ও অর্থ ফেরতের দাবি তুলেছেন।
পুরো ঘটনাটি নিয়ে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রামবাসীরা চান, শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়েই নয়, বিদ্যুৎ দপ্তরের ভেতরেও যেন স্বচ্ছ তদন্ত হয়, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এই ধরনের প্রতারণার শিকার না হন।