বাংলাদেশের অস্থির রাজনীতির সুযোগে জেল থেকে ছাড়া পেলো কয়েকজন কট্টর জঙ্গি। এবার কি এদের অণুপ্রবেশ ত্রিপুরাতেও?
নিজস্ব প্রতিনিধি : ত্রিপুরা :প্রিয়াংকা বনিক : ২ সেপ্টেম্বর
আবারও অনুপ্রবেশের দায়ে তিনজন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পশ্চিম আগরতলা থানায় পুলিশ।
আগরতলা আর এম এস চৌমুহনী এলাকা থেকে পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ আটক করে তাদের।
সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার পরও অবৈধভাবে বাংলাদেশীরা রাজ্যে প্রবেশ করছেন।
পশ্চিম থানার ওসি পরিতোষ দাস বলেন, গত ২৯ আগস্ট লঙ্কামুড়া থেকে এক বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে আরও দুইজন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আগরতলা আর এম এস চৌমুহনী থেকে আরও তিন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়েছে। আজ তাদের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এদিকে বাংলাদেশের অস্থির রাজনীতির সুযোগ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে বেশ কয়েক জন কট্টর জঙ্গি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে। সূত্রের বক্তব্য, এর ফলে অসম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ-সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এবিটি গত কয়েক বছর ধরেই তাদের সন্ত্রাসের জাল বিস্তার করছে বলে অভিযোগ। ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, আল-কায়দা ও পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে এবিটি-র। অসমে সম্প্রতি এবিটি সদস্য গ্রেফতারও হয়। ত্রিপুরা পুলিশের হাতেও ধরা পড়েছে সংগঠনটির স্লিপার সেলের সদস্যরা। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশও বিশেষ অভিযান চালিয়ে গত বছর নব্য জেএমবির সঙ্গে এবিটি জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের জেরা করে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে এবিটি ভারতেও নাশকতা চালানোর ছক কষছে বহু দিন ধরে। তাই এবিটি প্রধান রহমানির মুক্তির পর জারি হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়ে দিল্লির অবস্থান স্পষ্ট করেন তাঁর শপথ গ্রহণের পরই। পরবর্তীতে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বর্মা নতুন সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারও বারবার দিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলছে। জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানও বলেছেন, তাঁরাও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চান। ইসলামি জঙ্গিবাদকে জামায়াত সমর্থন করে না— এমন মন্তব্যও করেছেন তিনি। বিএনপির তরফেও পুরনো শত্রুতা ভুলে বন্ধুত্বের বার্তা পৌঁছেছে দিল্লিতে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যে ভাবে জঙ্গিরা মুক্তি পাচ্ছে, তাতে চিন্তা বাড়ছে দিল্লির। ভারতের আশঙ্কা, নতুন করে বাংলাদেশের মাটি জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম থেকেই কড়া হাতে জঙ্গিবাদ দমন করা না হলে ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।
Post Comment