×

জাপানকে সরিয়ে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিধর রাষ্ট্র হল ভারত।*

জাপানকে সরিয়ে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিধর রাষ্ট্র হল ভারত।*

নিজস্ব প্রতিনিধি :ইন্ডিয়া :প্রিয়াংকা বনিক :২৫ সেপ্টেম্বর

রাশিয়া ও জাপানকে হারিয়ে , এশিয়ার তৃতীয় শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠল ভারত। অস্ট্রেলিয়ার লোই ইনস্টিটিউট থিঙ্ক ট্যাঙ্কের বার্ষিক এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের আগে আছে শুধুমাত্র আমেরিকা ও চিন। জাপানের শক্তি ক্ষয়ের পিছনে তাদের অর্থনৈতিক পতনই দায়ী বলে জানানো হয়েছে সমীক্ষায়।আর এই কারণেই এশিয়ার সবথেকে শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী দেশগুলির তালিকায় বেশিরভাগ সূচকেই চতুর্থ স্থানে নেমে এসেছে টোকিয়ো। পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তরে রাশিয়া থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত, অন্তত ২৭টি দেশ ও অঞ্চলকে সম্পদ এবং প্রভাবের পরিমাপ অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হয়।সামরিক ক্ষমতা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব— এই রকম আটটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তালিকাটি তৈরি হয়েছে।

জাপানকে সরিয়ে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিধর রাষ্ট্র হল ভারত।*

ভারত সেই সব সূচকে অন্যান্য দেশকে পিছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে। করোনা পরবর্তী সময়ে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি অনেকাংশে বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ভারতের জনসংখ্যা এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি খুবই উল্লেখযোগ্য। ভারতের ভবিষ্যৎ ক্ষমতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সূচকে এই বৃদ্ধি ৮.২ পয়েন্ট। ভারতের যুব সম্প্রদায়ের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি। ফলে ভবিষ্যতে এই যুব সম্প্রদায়ই দেশের শক্তিশালী সম্পদ হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র।গত ছয় বছরের তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ২০২৪ সালের এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্সে এই অঞ্চলের শক্তিকেন্দ্রের পরিবর্তন ধরা পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও যথেষ্ট প্রভাবশালী, কিন্তু চিনের দিক থেকে ক্রমে সামরিক চাপ বাড়ছে। প্রতিটি দেশের অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা, কূটনৈতিক এবং অন্যান্য শক্তির ভিত্তিতে তাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। যেমন সামরিক ক্ষেত্রে চিন অনেকটা এগোলেও, তাদের সামগ্রিক প্রভাব বাড়েওনি, কমেওনি। এই সমীক্ষার মূল ফলাফল হল, চিনের শক্তি এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে অনেক কম। কিন্তু এশিয়ার অন্যান্য দেশের থেকে তারা অনেক উপরে আছে। দেখা যাচ্ছে, এশিয়ায় তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে, সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে চিনের কাছে করমে জমি হারাচ্ছে তারা। এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্সে আটটি প্যারামিটারের মধ্যে ছয়টিতে চিনের থেকে এগিয়ে রয়েছে আমেরিকা।কেন্দ্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে প্রভূত উন্নতি করেছে। বহু ক্ষেত্রে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থান দেশকে শক্তিশালী করে তুলেছে। ভারতের উপর কারও প্রভাব নেই। পাশাপাশি, দেশের সাংস্কৃতিক প্রভাবও সূচকে ভারতের অবস্থান নির্ণয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে।ভারত সম্পর্কে সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, “ভারত ধীরে হলেও ক্রমে উপরে উঠছে। জাপানকে টপকে ভারত এশিয়ার তৃতীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তবে, ভারতের হাতে যে সম্পদ রয়েছে, তার যা সম্ভাবনা, সেই সম্ভাবনাকে এখনও ছুঁতে পারেনি তারা। এশিয়ায় ভারতের শক্তি বাড়ছে। জাপানকে টপকে প্রথমবারের মতো তারা তৃতীয় স্থান দখল করেছে। তবে, “ভারতের উত্থান” নিয়ে যে প্রত্যাশা, আর বাস্তব ছবিটার মধ্যে এখনও স্পষ্ট ব্যবধান রয়ে গিয়েছে। এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্সে দেখা যাচ্ছে, এখনও মালাক্কা প্রণালীর পূর্বে শক্তি এবং প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে নয়া দিল্লির ক্ষমতা সীমিত। তবে, এর প্রভাব প্রতিশ্রুত স্তরের নীচে থাকার অর্থ, একটি প্রধান শক্তি হিসাবে আরও বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের।, এই অঞ্চলে নিরাপত্তাগত বিষয়গুলিতে আগের তুলনায় অনেক বড় ভূমিকা নিতে শুরু করেছে জাপান। এতদিন পর্যন্ত জাপানকে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি শক্তিকেন্দ্র বলে মনে করা হত। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টোকিয়ো প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার দিকে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠছে। তবে, এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা যেভবে বাড়ছে, সেই কারণেই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে টোকিয়োর প্রভাব ক্রমে কমছে। একসময় জাপানকে একটি শক্তিশালী প্রযুক্তিগত দেশ বলে বিবেচনা করা হত। কিন্তু, দক্ষিণ কোরিয়া, চিন এবং তাইওয়ানের মতো দেশগুলি এই ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে এসেছে। এই প্রতিযোগিতার মুখে জাপান অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে।ভারতের সামরিক শক্তি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দেশ মূলত রাশিয়ার থেকে ভারত নানা সময়ে নানা রকম অস্ত্র কিনে তাদের ভান্ডার মজবুত করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তি এখন বিশ্বের মধ্যে অন্যতম। সেই সব শক্তির বিচারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত অনেকটাই এগিয়ে।

Post Comment

You May Have Missed