আরজি কর ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল নেতার
নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রিয়াংকা বনিক : ১৪ আগস্ট
আরজি কর ইস্যুতে উত্তাল বাংলা। প্রতিবাদের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে দেশের অনেক প্রান্তেও। আর এর মধ্যেই বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনের। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার মেয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী।
তাঁর সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। এমনকি প্রাক্তন আরজি করের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকেও নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন, প্রথমদিন থেকে দলকে ডিফেন্ড করে এসেছি। কাল পর্যন্ত যা বলার বলেছি, আর কিছু বলব না। বিবেকের তাড়না থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি।
শুধু তাই নয়, শান্তনু সেন বলেন, দলের হয়ে আমি কাজ করছি না বলে কেউ কেউ দলেই তা বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের দাবি, আমি নাকি চিকিৎসকদের হয়ে কাজ করছি। দু’দিকেই ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। তবে তৃণমূলের প্রথম দিনে অনুগত সৈনিক। ভারতের যে কোনও ইস্যুতে বললেও আরজি কর নিয়ে আর কোনও কথা নয় বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন এই সাংসদ।
এছাড়াও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়াশোনার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
শান্তনু সেনের দাবি, আর জি কর হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী, আমার মেয়ে। সেখানে পড়ে। কিন্তু আমার মেয়ে বলে একেবারে ওরা একঘরে করে দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে ও যাবে না। পড়াশোনাও একেবারে রসাতলে চলে গিয়েছে। প্রশ্ন জানা একেবারেই সহজ। শুধুমাত্র কয়েকজনকে খুশি করতে হবে।
শুধু তাই নয়, একেবারে বই খুলে কিংবা উত্তর দেখেও লেখা সম্ভব বলেও বিস্ফোরক দাবি তৃণমূল নেতার। শুধু তাই নয়, তাদের খুশি রাখলে অনার্স পাওয়া যায়, নাহলে ফেল করতে হয় বলেও দাবি। তবে এদিন কারোর নাম এদিন নেন শান্তনু। এমনকি কোন রাজনৈতিক দল বা কিছুই স্পষ্ট ভাবে বলেননি। একই সঙ্গে প্রাক্তন আরজি করের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের প্রভাব নিয়েও একের পর এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেন।
তবে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র জানান, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে হয়তো ভুল বুঝতে পারেন, তবে সঠিক তথ্য তাঁর কাছে দেওয়া হচ্ছে না। আমার নৈতিক দায়িত্ব সেই তথ্য তাঁর কাছে পৌছে দেওয়া। আরজি কর ইস্যুতে একেবারে উত্তাল পরিস্থিতি। আর এর মধ্যেই তৃণমূল নেতার একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
আজ বাংলা সহ দেশের ভিন্ন ভিন্ন মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিতে থাকবেন তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন। শান্তনুর মতো তিনিও পেশায় চিকিৎসক। চক্ষু বিশেষজ্ঞ। আরজি করের প্রাক্তনী তিনি। চিকিৎসক দম্পতির মেয়েও আরজি করেরই পড়ুয়া। আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর উদ্বিগ্ন শান্তনু-জায়া।
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। শহর কলকাতা থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় বিভিন্ন শহরে এই কর্মসূচির কথা রয়েছে। স্থান বিশেষে কোথাও কোথাও কিছুটা আগেই শুরু হবে ‘রাত দখল’-এর কর্মসূচি।
এক দিকে যখন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিকে সমালোচনায় বিঁধেছেন, তখন উল্টো দিকে তৃণমূলের ভিতর থেকেও একাংশ কর্মসূচির পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছেন। মঙ্গলবার রাতেই তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় জানিয়েছেন, তিনি রাতের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে সুখেন্দুশেখর লিখেছিলেন, ‘আমি বুধবারের কর্মসূচিতে শামিল হব। কারণ আরও অনেক বাঙালি পরিবারের মতো আমারও এক মেয়ে আছে, আমারও এক ছোট নাতনি আছে।’
2 comments