ত্রিপুরা ও উত্তর–পূর্ব ভারতের জনজাতি সমাজের অধিকার রক্ষায় নতুন উদ্যোগ নিলেন তিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। দিল্লি সফর শেষে বুধবার আগরতলা বিমানবন্দরে নামার পরই তিনি ঘোষণা করেন নতুন এক আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম — “ওয়ান নর্থ ইস্ট”।
এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলোকে একত্রিত করে যৌথভাবে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।প্রদ্যোত দেববর্মণ বলেন, “আমরা সবাই একই সমস্যার মুখোমুখি — ভূমি, সংস্কৃতি, ভাষা ও আমাদের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। আলাদা আলাদা দল হিসেবে লড়াই করলে সমাধান সম্ভব নয়।
এক প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হলেই শক্তিশালী দাবিদাওয়া তৈরি করা যাবে।”তিনি কংগ্রেস, সিপিআইএম ও বিজেপিকেও আহ্বান জানান, জাতির স্বার্থে চিন্তা করার জন্য। প্রদ্যোতের বক্তব্য, “কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য নয়, তিপ্রাসা জাতির ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে সবাইকে।”প্রদ্যোত দেববর্মণ রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তাঁর অভিযোগ, TADC (ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়া অটোনোমাস ডিস্ট্রিক কাউন্সিল) অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ন্যায্য পেনশন দিতে পারছে না, বেকারত্ব বাড়ছে, শূন্য পদে নিয়োগ বন্ধ, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নেই, আর যুবসমাজ নেশায় জড়িয়ে পড়ছে।তিনি প্রশ্ন তোলেন, “২০১৬ সালের পর কেন ভিলেজ কমিটির নির্বাচন হচ্ছে না?” প্রদ্যোতের দাবি, এই নির্বাচন না হওয়ার কারণে তিপ্রা মথাকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং আগামী সোমবার এই বিষয়ে শুনানি নির্ধারিত হয়েছে।রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, অতীতে ত্রিপুরায় যত আঞ্চলিক দল তৈরি হয়েছে, তাদের অধিকাংশই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তাই এই নতুন ‘ওয়ান নর্থ ইস্ট’ প্ল্যাটফর্মের ঘোষণাকে অনেকে আঞ্চলিক দলগুলোর অস্তিত্ব রক্ষার কৌশল হিসেবেও দেখছেন।