বাথরুমে প্রসব, নবজাতকের দেহ ব্যাগে লুকিয়ে পালানোর চেষ্টা — স্বামী আটক
গোমতী জেলার উদয়পুর মহকুমার অন্তর্গত জামজুরী গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজধরনগরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সোমবার দুপুরে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা—খেলতে খেলতে পুকুরে পড়ে প্রাণ হারায় মাত্র দুই বছরের শিশু শুভম সরকার।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুভম ছিল শান্তি সরকারের একমাত্র সন্তান। সেদিন দুপুরে বাড়ির আঙিনায় খেলছিল সে। খেলার ছলে হাতে থাকা প্লাস্টিকের বন্দুকটি হঠাৎ পুকুরে পড়ে যায়। প্রিয় খেলনাটি তুলতে গিয়ে শুভমের পা পিছলে যায়, আর মুহূর্তের মধ্যেই শিশুটি পুকুরের জলে তলিয়ে যায়।দীর্ঘক্ষণ শুভমকে না দেখে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মা ও প্রতিবেশীরা চারপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর পুকুরের জলে শুভমের নিথর দেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়। মা দ্রুত পুকুরে নেমে শিশুটিকে উদ্ধার করে, জীবিত আছে এই আশায় নিয়ে ছুটে যান গোমতী জেলা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভমকে মৃত ঘোষণা করেন।এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা এলাকায় নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরা জানান, শুভম ছিল সবার প্রিয়। ছোট্ট মুখে তার হাসি, খেলার ছলে দৌড়ঝাঁপ—সবই যেন রাজধরনগরের প্রতিটি ঘরে ঘরে আনন্দ বয়ে আনত। তার অকাল মৃত্যুতে এখন শোক ও নীরবতা ছেয়ে গেছে চারদিকে।স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনাটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে কোনো অন্য কারণের ইঙ্গিত মেলেনি। পুলিশ ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেহটি পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে।গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “এমন একটি নিরীহ শিশুর মৃত্যু সহ্য করা অসম্ভব। শুভমকে আমরা প্রতিদিন হাসতে দেখতাম, আজ সেই বাড়িতে শুধু কান্নার শব্দ।”শুভমের মৃত্যুর পর থেকে রাজধরনগরে শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে। শিশুটির বাবা-মা বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। তাদের মুখে একটাই প্রশ্ন—একটি খেলনা বন্দুক খুঁজতে গিয়ে কেন এমন অকাল মৃত্যু?এই মর্মান্তিক ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজকর্মীরা শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে বাড়ির আশেপাশে পুকুর, খাল বা জলাশয় থাকলে শিশুদের একা খেলতে না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।