
ত্রিপুরার গর্ব! আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এমএমএ রিং কাঁপালেন সুদীপ
আতোর্তু এমএমএ চ্যাম্পিয়নশিপে নজর কেড়েছেন ত্রিপুরা লেজেন্ডস – এমএমএ অ্যান্ড বিজেজে একাডেমির তরুণ ফাইটার সুদীপ জামাতিয়া। এক রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী মুস্তাকিম শেখ-কে হারিয়ে নিজের মিক্সড মার্শাল আর্টস (MMA) যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যোগ করলেন।
লড়াইয়ের শুরু থেকেই দুই প্রতিযোগী আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণের মাধ্যমে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন। মুস্তাকিম তার দ্রুত ঘুষি ও কিকের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে, সুদীপ ঠান্ডা মাথায় প্রতিটি আক্রমণ সামলে সঠিক সময়ে পাল্টা আঘাত হানেন। ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে বেশ কয়েকটি টেকনিক্যাল মুভ ব্যবহার করে তিনি লড়াইয়ের মোড় ঘুরিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত নির্দ্বিধায় বিচারকরা সুদীপ জামাতিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
এই জয়ের ফলে সুদীপ জামাতিয়া বর্তমানে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে #৩,৯৯৮ র্যাঙ্কধারী এমএমএ ফাইটার। এছাড়াও তিনি এশিয়া সাউথ সাব-রিজিয়নেও র্যাঙ্কপ্রাপ্ত। যেহেতু তার মোট লড়াই দুই বা তার কম, তাই নিয়ম অনুযায়ী তিনি যে অঞ্চলে প্রতিযোগিতা করছেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সেখানে র্যাঙ্কিংয়ে উঠে এসেছেন।
তবে ভবিষ্যতে তার সামনে চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন হবে। নিয়ম অনুযায়ী, যদি তিনি আরও বেশি সংখ্যক লড়াইয়ে অংশ নেন, তবে শেষ তিনটির অন্তত একটি এবং শেষ ছয়টির অন্তত দুটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে হতে হবে, যাতে তিনি সেখানে র্যাঙ্কিং ধরে রাখতে পারেন।
বর্তমানে তিনি লাইটওয়েট বিভাগে র্যাঙ্কপ্রাপ্ত, কারণ তার শেষ দুই লড়াইয়ের মধ্যে অন্তত একবার তিনি এই ওজন শ্রেণিতে লড়েছেন।
ত্রিপুরা থেকে এমএমএ বিশ্বে পদার্পণ
ত্রিপুরার তরুণ যোদ্ধা সুদীপ জামাতিয়া প্রমাণ করে দিয়েছেন যে প্রতিভা থাকলে রাজ্যের সীমানা কোনো বাধা নয়। আতোর্তু এমএমএ চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর দুর্দান্ত জয়ের মাধ্যমে তিনি শুধু ত্রিপুরার নাম উজ্জ্বল করেননি, বরং এমএমএ বিশ্বমঞ্চে নিজের উপস্থিতি জোরালোভাবে জানান দিয়েছেন।
নিয়মিত অনুশীলন, কঠোর শারীরিক প্রশিক্ষণ এবং অসাধারণ মানসিক শক্তির মিশেলে সুদীপ এই সাফল্য অর্জন করেছেন। তাঁর পারফরম্যান্স উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য তরুণ ফাইটারদের জন্য বড় প্রেরণা হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জয় ত্রিপুরাকে ভারতের মিক্সড মার্শাল আর্টস মানচিত্রে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিল।
ত্রিপুরা থেকে উঠে আসা এই ফাইটারের সাফল্য স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। এমএমএ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তুলনামূলকভাবে নতুন খেলা হলেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সুদীপ জামাতিয়ার এই জয় অনেক তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমএমএ অ্যান্ড বিজেজে একাডেমির কোচরা জানিয়েছেন, সুদীপ অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি নিজের দক্ষতা বাড়াচ্ছেন। ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার মতো যোগ্যতা তার আছে বলেই বিশ্বাস তাঁদের।
এখন সবার চোখ সুদীপের পরবর্তী লড়াইয়ের দিকে। যদি তিনি ধারাবাহিকভাবে জয় ধরে রাখতে পারেন, তবে র্যাঙ্কিং তালিকায় আরও ওপরে উঠে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। এমএমএ বিশ্বে প্রতিযোগিতা তীব্র হলেও, তার দৃঢ় মনোবল ও ফাইটিং স্পিরিট তাকে একদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ত্রিপুরার নাম উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।