
ত্রিপুরার উদয়পুর-সাব্রুম জাতীয় সড়ক প্রকল্পে যুক্ত হলো দীর্ঘদিনের দাবি
ত্রিপুরার শান্তিরবাজার বাজার এলাকার বহু প্রতীক্ষিত নিকাশি ব্যবস্থার দাবি অবশেষে সরকারি পরিকল্পনায় স্থান পেল। জাতীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে উদয়পুর-সাব্রুম জাতীয় সড়ক (এনএইচ-০৮)-এর সম্প্রসারণ ও মজবুতকরণের পাশাপাশি বাজার এলাকার দুই পাশে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তকে স্থানীয় বাসিন্দারা এক “স্বস্তির খবর” বলে বর্ণনা করছেন। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সমস্যায় ভুগতে হয়েছে ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীদের।
এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্তির পেছনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। গত ১ জুলাই তিনি কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকরিকে চিঠি দিয়ে শান্তিরবাজার এলাকায় পরিকল্পিত ও টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থার দাবি জানান।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, “বর্ষাকালে সড়কের দুই পাশে সঠিক নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় জল জমে থাকে। এর ফলে শুধুমাত্র যান চলাচল নয়, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয় তার সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে নতুন অর্থবর্ষের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
আজ ঘোষণা আসার পর সাংসদ বিপ্লব দেব সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন—
“শান্তিরবাজার এলাকার দীর্ঘদিনের জল নিকাশী সমস্যার সমাধানে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। আমার অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকরিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় জনগণ স্বস্তি পাবেন।”
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কিলোমিটার ৮২.০৯০ থেকে ৮২.৮৪০ পর্যন্ত এলাকায় দুই পাশে আধুনিক আরসিসি ড্রেন নির্মিত হবে। এটি শুধু নিকাশি সমস্যা দূর করবে না, বরং রাস্তার স্থায়িত্বও বাড়াবে।
এর পাশাপাশি, উদয়পুর থেকে সাব্রুম পর্যন্ত জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণের কাজও একই পরিকল্পনার আওতায় করা হবে। ফলে গোটা দক্ষিণ ত্রিপুরার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মান আরও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শান্তিরবাজারের ব্যবসায়ী সংগঠনের এক সদস্য বলেন,
“বর্ষাকালে দোকানের সামনে পানি জমে ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যেত। ড্রেন না থাকায় পথচারীরাও ভুগতেন। এখন মনে হচ্ছে সমস্যার সমাধান হবে।”
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সরকারি পরিকল্পনায় এই দাবি স্থান পাওয়ায় এলাকায় “স্বস্তির নিঃশ্বাস” বইছে। অনেকে আশা করছেন, এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত হলে বাজারের পরিবেশ যেমন উন্নত হবে, তেমনি বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও অনেকটা স্বাভাবিক হবে।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, শান্তিরবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাজার এলাকায় টেকসই নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি হওয়া শুধু একক প্রকল্প নয়—এটি ভবিষ্যতের আরও উন্নয়নমূলক কাজের পথ খুলে দেবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ প্রচেষ্টায় দক্ষিণ ত্রিপুরার অন্যান্য অবকাঠামোগত চাহিদাও পূরণ হবে বলে তাদের ধারণা।
শান্তিরবাজার বাজার এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি অবশেষে পূরণের পথে। সঠিক সময়ে কাজ শেষ হলে এটি কেবল ড্রেন নির্মাণ নয়, বরং মানুষের জীবনমান উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।