
স্বাধীনতা দিবসের আগমুহূর্তে ত্রিপুরা পুলিশ একটি সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সম্ভাব্য বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছে। জানা গেছে, ভাংমুন থানার আওতায় ভাংমুন নাকা পয়েন্টে তল্লাশির সময় পুলিশ একটি গাড়ি আটক করে এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও নাশকতার সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটক গাড়ি থেকে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের পরিচয়—আসামের হাইলাকান্দি জেলার ধনঞ্জয় রিয়াং (৩৯) এবং ধাম চেরার সোইদা নন্দ রিয়াং (৩৪)। তারা নবগঠিত দুষ্কৃতী গোষ্ঠী Tripura United National Front (TUNAF)-এর সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে।
উদ্ধার হওয়া সামগ্রী
তল্লাশিতে পুলিশ যে সব জিনিস উদ্ধার করেছে তার মধ্যে রয়েছে—
বৈদ্যুতিক ডেটোনেটর
নিওগেল বিস্ফোরক
TUNAF-এর অফিসিয়াল লেটারহেড
হুমকিমূলক নোট
তিনটি মোবাইল ফোন
ফোন নম্বরসহ একটি ডায়েরি
অন্যান্য সন্দেহজনক নথি ও সামগ্রী
এইসব প্রমাণ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আসন্ন দিনে রাজ্যে সন্ত্রাস ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এই অভিযুক্তরা পুলিশ কর্মীদের হত্যা, পুলিশের যানবাহন ধ্বংস এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করার পরিকল্পনা করেছিল। এর মাধ্যমে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশের দ্রুত অভিযান
ত্রিপুরা পুলিশের তাৎক্ষণিক তৎপরতার ফলে এই ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায় এবং সম্ভাব্য বড় ধরনের নিরাপত্তা দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে আদালতে তোলা হবে।
বর্তমানে পুলিশের বিশেষ তদন্ত দল এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অন্য সহযোগীদের সন্ধানে নেমেছে। TUNAF-এর বৃহত্তর নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে এবং এর মূল নেতৃত্বকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ মনে করছে, এ ঘটনা শুধুমাত্র একটি বিচ্ছিন্ন নাশকতার পরিকল্পনা নয়, বরং একটি সুসংগঠিত গোষ্ঠীর দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমের অংশ।
ত্রিপুরা পুলিশের এই সাফল্য শুধু একটি বড় সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ করল না, বরং স্বাধীনতা দিবসের আগে রাজ্যের মানুষকে নিরাপত্তার আশ্বাসও দিল।