
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর নতুন করে ২৫% আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা মূলত রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে আরোপিত। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৭ আগস্ট থেকে ২১ দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ২৭ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। এর ফলে অনেক ভারতীয় পণ্যের উপর ট্যারিফের হার বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
এই সময়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা কার্যত স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। তবে হোয়াইট হাউস এখনও নিশ্চিত করেনি যে চীনসহ অন্যান্য তেল আমদানিকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধেও অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা।
চাপের মধ্যে আশার আলো দেখছেন আনন্দ মাহিন্দ্রা
এই সিদ্ধান্তে ভারতের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও, দেশের শিল্প ও বাণিজ্য মহলে ভিন্নধর্মী প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা গেছে। মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা এই ঘটনাকে দেশের জন্য একটি “দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনার দ্বার” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক প্রতিক্রিয়ায় মাহিন্দ্রা লেখেন, “বিশ্ব আজ এক নতুন অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন এক সময়ে, ভারতের উচিত এই মন্থন থেকে অমৃত আহরণ করা, যেমনটি ১৯৯১ সালের বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে করেছিল।”
তিনটি মূল ক্ষেত্র: সুযোগের সিঁড়ি
মাহিন্দ্রা ভারতের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে তুলে ধরেছেন যেখানে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দীর্ঘমেয়াদে সুফল মিলবে:
একক জানালা বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম – ধীরে ধীরে সংস্কারের পথে না গিয়ে, ভারতের উচিত বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি একক, স্বচ্ছ এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। এই ব্যবস্থায় কয়েকটি রাজ্য একত্র হয়ে অভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ করতে পারে।
পর্যটন খাতের সদ্ব্যবহার – ভারতীয় পর্যটন শিল্পে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্র হতে পারে।
MSME ও উৎপাদন খাতকে বেগবান করা – ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে তরলতা ও সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং PLI (Production-Linked Incentive) প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।
মাহিন্দ্রা আরও উল্লেখ করেন, ইউরোপে যেমন জার্মানি তার কঠোর অর্থনৈতিক নীতি শিথিল করছে বা কানাডা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বাধা দূর করার উদ্যোগ নিচ্ছে – তেমনিভাবে ভারতকেও এই বৈশ্বিক পরিবর্তনের তরঙ্গে সঠিকভাবে সাঁতার কেটে এগিয়ে যেতে হবে।