
ত্রিপুরায় স্মার্ট মিটার বিরোধী আন্দোলনে নতুন জোয়ার। বিদ্যুৎ পরিষেবায় স্মার্ট মিটার বসানো, বেসরকারীকরণ এবং কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন (TECA)। সর্বভারতীয় স্তরে আয়োজিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে সংস্থাটি।
সাংবাদিক সম্মেলনে TECA নেতৃবৃন্দ জানান, স্মার্ট মিটার আসলে একটি প্রিপেইড ব্যবস্থা, যা বিদ্যুৎকে নাগরিক অধিকার থেকে সরিয়ে একটি পণ্য হিসেবে তুলে ধরছে। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে আদানি, টাটা ও টরেন্টের মতো কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে বিপুল মুনাফার সুযোগ করে দিচ্ছে।
TECA-র দাবি, ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেড (TSECL) বহু জায়গায় গ্রাহকদের অনুমতি না নিয়েই স্মার্ট মিটার বসিয়ে দিয়েছে। কখনও ভয় দেখিয়ে, কখনও আবার বাড়ির মালিক অনুপস্থিত থাকাকালীন জোরপূর্বক মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
TECA-র পক্ষ থেকে জানানো হয়, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যে স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে জনমতের চাপে প্রকল্প স্থগিত রয়েছে। সেই উদাহরণ তুলে ধরে ত্রিপুরাতেও একই দাবি জানানো হয়েছে। তাঁদের মতে, স্মার্ট মিটার শুধু খরচ বাড়াচ্ছে না, বিদ্যুৎ খাতকে পুরোপুরি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার পথ সুগম করছে।
TECA জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে TSECL লাভজনক ছিল। তবে নিয়োগে অব্যবস্থা ও প্রশাসনিক দুর্বলতার জেরে আজ এই সংস্থা ক্ষতির মুখে। এমন অবস্থায় স্মার্ট মিটার প্রকল্পকে ঘিরে আরও আর্থিক বোঝা সাধারণ গ্রাহকের ঘাড়ে চাপবে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
দুই ধরনের আবেদনপত্র ও জনসচেতনতার আহ্বান
আন্দোলন জোরদার করতে TECA দুটি আবেদনপত্র তৈরি করেছে—
১. স্মার্ট মিটার বসানো বন্ধের আবেদন,
২. ইতিমধ্যেই বসানো মিটার খুলে ফেলার অনুরোধপত্র।
এই আবেদনপত্রগুলি স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসে জমা দেওয়ার জন্য গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে, রাজ্যজুড়ে সচেতনতা কর্মসূচিও শুরু করেছে TECA।
সংগঠনের বার্তা একটাই — বিদ্যুৎ পরিষেবার উপর জনগণের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত।