দিল্লিমুখী তিপ্রা মথার পদযাত্রা: বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ রুখে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই
ত্রিপুরার তিপ্রা মথা দলের উদ্যোগে শুরু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী পদযাত্রা, যার মূল উদ্দেশ্য—বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা এবং তিপ্রাসা জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক ও জাতিগত অধিকার রক্ষা। আগরতলার উত্তর গেট থেকে এই যাত্রার সূচনা হয় শনিবার, তিপ্রা মথার নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে।এই পদযাত্রা শুধুই রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে না, বরং এটি একটি দীর্ঘদিনের আত্মপরিচয় ও নিরাপত্তার দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের রূপ। দলটির দাবি, বাংলাদেশ থেকে অব্যাহত অনুপ্রবেশে ত্রিপুরার জনসংখ্যার ভারসাম্য উল্লেখযোগ্যভাবে বদলে গেছে, যার ফলে আদিবাসী তিপ্রাসারা নিজ রাজ্যেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন।”এটি শুধুমাত্র ত্রিপুরার নয়, আন্তর্জাতিক সমস্যা,” বলেছেন তিপ্রা মথার অন্যতম নেতা ডেবিট মোরাসিং। তিনি অভিযোগ করেন, decades ধরে চলা এই সংকটে রাজ্য সরকার কার্যত নিষ্ক্রিয় থেকেছে। অনুপ্রবেশের কারণে তিপ্রাসারা জমি, চাকরি এবং সাংবিধানিক অধিকার হারাচ্ছেন বলেও অভিযোগ তাঁর।তিপ্রা মথার প্রতিষ্ঠাতা ও রাজ পরিবার-সদস্য প্রদ্যুত বিক্রম মানিক্য এই পদক্ষেপকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ডেবিট নিজে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমি একজন তিপ্রাসা হিসেবে তাঁর উদ্যোগকে সম্মান করি। জাতিগত অস্তিত্বের প্রশ্নে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে একসঙ্গে দাঁড়ানোই আজ জরুরি।”তিপ্রা মথার মূল দাবি তিনটি বিষয়ে কেন্দ্রীভূত:বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণ রোধআদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষণ’Greater Tipraland’ নামে পৃথক প্রশাসনিক কাঠামোর দাবিদলটির মতে, শুধু ত্রিপুরা নয়, এই সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকারের সক্রিয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তাঁদের দৃষ্টিতে, এটি একটি জাতিগত পরিচয় সংরক্ষণের লড়াই, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে।বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে জানা যায়, তিপ্রা মথার এই পদযাত্রা রাজ্য রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে এক আন্তর্জাতিক আলোচনার প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উদ্বেগ এবং রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত প্রতিবাদ ভবিষ্যতের রাষ্ট্রীয় নীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Post Comment