মাস্টার পাড়ায় জন্ডিসের ছোবল, নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন
রাজধানীর ব্যস্ত আবাসিক এলাকা মাস্টার পাড়া এখন জন্ডিস আতঙ্কে জর্জরিত। হঠাৎ করেই জলবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে জনমনে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিডাব্লিউএসের (DWS) মাধ্যমে সরবরাহ হওয়া পানীয় জলের মধ্যেই রয়েছে সমস্যার মূল। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর জল থেকেই একের পর এক জন্ডিস আক্রান্তের খবর মিলছে।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছান পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসক ডঃ বিশাল কুমার, সঙ্গে ছিলেন ডিডাব্লিউএস, এএমসি, স্বাস্থ্য দপ্তর এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্পোরেটর শিল্পী সেন সহ একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
জেলা শাসক স্পষ্ট জানিয়েছেন—
“জলের গুণমান নিয়ে কোনো রকম আপস করা হবে না। সমস্ত বাড়ির সংযোগ পাইপ পরীক্ষা করে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে নতুন পাইপলাইন বসানো হবে।”
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায় চলমান ড্রেনেজ কাজের সময় যেন জল সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনওরকম ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।
স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আক্রান্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং জন্ডিস ছাড়াও অন্যান্য সংক্রামক রোগ নিয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে।
জন্ডিস: দূষিত জলের ভয়ঙ্কর ফলাফল
বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্ডিস শুধু একটি রোগ নয়, এটি একটি গভীর স্বাস্থ্য সংকেত।
প্রধানত হেপাটাইটিস A ও E ভাইরাস দূষিত জল ও অপরিষ্কার খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে।
রোগের লক্ষণ:
- চোখ ও ত্বকের হলুদাভ রঙ
- জ্বর, দুর্বলতা
- ক্ষুধামান্দ্য, বমি বমি ভাব
কারণ হিসেবে উঠে এসেছে:
- পুরনো ও লিকেজযুক্ত পাইপলাইন
- অপরিষ্কার ড্রেনের পাশ দিয়ে যাওয়া জল সংযোগ
- বিশুদ্ধ পানীয় জলের ঘাটতি
প্রশাসনের বার্তা: সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন
প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাগরিকদের জল ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
মাস্টার পাড়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে গোটা শহরের পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থার উপর নতুন করে নজরদারি শুরু হয়েছে।
Post Comment