×

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের আবহে ত্রিশক্তির উপস্থিতি: পুতিন জানালেন রাশিয়ার নিরপেক্ষতার কারণ

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের আবহে ত্রিশক্তির উপস্থিতি: পুতিন জানালেন রাশিয়ার নিরপেক্ষতার কারণ

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিচ্ছে। ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে—ইরানের দীর্ঘদিনের বন্ধু রাশিয়া ও চিন কী ভূমিকা নেবে? কেন সরাসরি তেহরানের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না মস্কো বা বেইজিং?এই বিষয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা সবসময় ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করি। ইরান ও ইজরায়েল—দু’টি দেশের সঙ্গেই রাশিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।”তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও বর্তমান রাশিয়া ফেডারেশনের প্রায় ২০ লক্ষ নাগরিক বর্তমানে ইজরায়েলে বসবাস করেন। ফলে দেশটি রাশিয়াভাষী এক বিশাল জনগোষ্ঠীর আবাসভূমিতে পরিণত হয়েছে। এই বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিতে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ থেকেছে।”রাশিয়ার এই নিরপেক্ষতা নিয়ে সমালোচনার জবাবে পুতিন বলেন, “আমরা আরব ও ইসলামিক দেশগুলির সঙ্গে বহুদিন ধরেই গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আবদ্ধ। আমাদের দেশের জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মুসলিম। ফলে ইসলামিক বিশ্বের অনুভূতিও আমাদের কাছে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”এদিকে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের দশম দিনে নতুন মোড় নিয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আমেরিকা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, কিন্তু ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই তারা সরাসরি সামরিক অভিযান শুরু করে। শনিবার রাতে ইরানের মাটিতে এয়ার স্ট্রাইক চালায় মার্কিন বাহিনী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সোশাল মিডিয়া Truth-এ দাবি করেছেন, ফোরডো, নাতানজ ও ইসফাহান—এই তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে সফলভাবে হামলা চালানো হয়েছে।ট্রাম্প লিখেছেন, “ফোরডো ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। সেখানে আমাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহারে নির্ভুল আঘাত হানা সম্ভব হয়েছে। আমরা ইরানের পরমাণু ক্ষমতাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার লক্ষ্যে কাজ করছি, যাতে এই দেশ বিশ্বকে পরমাণু হুমকি না দিতে পারে।”তিনি আরও বলেন, “ইরান যদি এখনো আগ্রাসন চালাতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে এর চেয়েও বড় হামলা চালানো হবে এবং তা হবে আমাদের জন্য আরও সহজ।”বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধ কেবল ইরান-ইজরায়েল সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং তা ধীরে ধীরে বিশ্বশক্তিগুলিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। রাশিয়া ও চিন কূটনৈতিক ভাষায় এখনও পর্যন্ত ‘সতর্কতা’ ও ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করলেও সামরিকভাবে তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে না।এখন দেখার বিষয়, যুদ্ধ কোন দিকে মোড় নেয় এবং বিশ্বশান্তির পরিণতি কোন পথে এগোয়।

Previous post

ত্রিপুরায় সহকারী অধ্যাপক নিয়োগে বয়সসীমা তুলে দেওয়ার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের

Next post

মাত্রমাত্র ১৫ বছর বয়সে অকালমৃত্যু কিশোরীর – আগরতলায় হৃদয়বিদারক ঘটনা, রহস্য ঘনীভূত

Post Comment

You May Have Missed