×

ত্রিপুরা পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য: শিক্ষার পথে ঐতিহাসিক অগ্রগতি।

ত্রিপুরা পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য: শিক্ষার পথে ঐতিহাসিক অগ্রগতি।

ত্রিপুরার ইতিহাসে আজকের দিনটি সত্যিই একটি গর্বময় ও স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রইল। মিজোরাম ও গোয়ার পর ত্রিপুরা ভারতের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে পূর্ণ সাক্ষরতার গৌরব অর্জন করল, যা একান্তই সংখ্যাগত অর্জন নয়—বরং এটি রাজ্যের সাধারণ মানুষ, প্রশাসন এবং শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের এক অনন্য উদাহরণ।এই ঐতিহাসিক সাফল্যের ঘোষণা আগরতলার রবীন্দ্র ভবনে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। মুখ্যমন্ত্রী সাহা এই অর্জনকে “একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক” বলে অভিহিত করেন এবং উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ লক্ষ্যে পৌঁছতে সাক্ষরতা একটি অপরিহার্য ভিত্তি।শিক্ষামন্ত্রকের প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতা বিভাগের পরিচালক প্রীতি মীনা এই অর্জনের জন্য ত্রিপুরা সরকার এবং সাধারণ জনগণের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতকে সম্পূর্ণ সাক্ষর করতে কেন্দ্র সরকার বদ্ধপরিকর, আর ত্রিপুরার এই অগ্রগতি সেই বৃহৎ স্বপ্ন পূরণের এক দৃঢ় পদক্ষেপ।ত্রিপুরার সাক্ষরতা যাত্রা ছিল দীর্ঘ, কঠিন এবং প্রতিকূলতাপূর্ণ। ১৯৬১ সালে যেখানে সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ২০.২৪ শতাংশ, সেখানে তা এখন পৌঁছেছে ৯৫.৬ শতাংশে। এই অগ্রগতির পিছনে রয়েছে ২০২২ সালে শুরু হওয়া নব ভারত সাক্ষরতা কর্মসূচির বাস্তবায়ন। এই কর্মসূচি শুধু মৌলিক পড়া-লেখা শেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ডিজিটাল জ্ঞান, আর্থিক সচেতনতা, মৌলিক গাণিতিক দক্ষতা ইত্যাদির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।এই কর্মসূচির সাফল্যে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক, সামাজিক চেতনা কেন্দ্র, এবং যুব সাক্ষরতা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের নিরলস প্রচেষ্টা ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতাই ত্রিপুরার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত শিক্ষার আলো পৌঁছে দিয়েছে।ত্রিপুরার এই অর্জন শুধু একটি রাজ্যের নয়, বরং সমগ্র দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনুপ্রেরণামূলক দৃষ্টান্ত।

Post Comment

You May Have Missed