তিনটি সাবমারসিবল, তবু জল নেই — তৃষ্ণায় কষ্টে গোয়েন্দোর টিলা
ত্রিপুরার সিমনা বিধানসভার ব্রহ্মকুণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়েন্দোর টিলা গ্রামে পানীয় জলের হাহাকার—তিনটি সাবমারসিবল পাম্প বসেও অকেজো, জলের সংকটে নাজেহাল সাধারণ মানুষ।
ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার মোহনপুর ব্লকের অন্তর্গত গোয়েন্দোর টিলা, একটি ছোট্ট গ্রাম—মোটে ৩৫টি পরিবার বসবাস করে এখানে। কিন্তু এই ছোট্ট গ্রামে আজ বড়ো সমস্যা পানীয় জলের।সরকারি উদ্যোগে গ্রামে বসানো হয়েছে একের পর এক তিনটি সাবমারসিবল পাম্প। কিন্তু বাস্তব চিত্র—একটিও চালু হয়নি।প্রথম পাম্পটি বসানো হয়েছিল মোহনপুর আরডি ব্লকের উদ্যোগে প্রায় ছয় মাস আগে। তারপর বামফ্রন্ট আমলে বসানো হয় দ্বিতীয় একটি পাম্প। এমনকি, তার পাঁচ মিটারের মধ্যেই বসানো হয় আরও একটি সাবমারসিবল।
স্থানীয় বাসিন্দা নান্টু গোয়ালা বলেন:“ভোল্টেজ এতটাই কম যে মেশিন চলছেই না। সাবমারসিবল বসিয়ে লাভ কী, যদি বিদ্যুৎ না থাকে!”গ্রামবাসীরা এখন কুয়ো আর হাতকলের জলের উপর নির্ভর করেই বাঁচছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় জল সংগ্রহের যুদ্ধ। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়েছেন গ্রামে থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের হেল্পার।
খিচুড়ি রান্না করতেই অসুবিধা হচ্ছে। বাচ্চাদের জন্য খাবার তৈরি করতেও যে জল লাগে, তা নেই।”সেন্টারটিতে একটি মার্ক-টু হ্যান্ড পাম্প থাকলেও সেটিও বহুদিন ধরে বিকল অবস্থায় পড়ে আছে।এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—সরকারি প্রকল্পে যে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে, তার ফল কী? শুধুই কি ‘আদ্যা শ্রাদ্ধ’?
সাবমারসিবল বসানো হয়েছে শুধু রিপোর্ট দেখানোর জন্য, বাস্তবে কোনও লাভ হয়নি। আমরা শুধু প্রতিশ্রুতি পাই, জল পাই না।”এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
ত্রিপুরার এই ছোট গ্রামটির সমস্যার মুখে যেন সবাই মুখ ফিরিয়ে আছে। উন্নয়নের গল্প কাগজে আছে, কিন্তু বাস্তবের মাঠে আজও তৃষ্ণার্ত গোয়েন্দোর টিলা।
Post Comment