আশারামবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলির প্রতিবাদে উত্তাল সীমান্তগ্রাম — তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর
খোয়াইয়ের সীমান্ত গ্রাম আশারাম বাড়িতে একটি প্রাথমিক বিভাগের স্কুলের শিক্ষককে বদলি করার প্রতিবাদে গ্রামের মানুষজন প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে আজ সাতসকালে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ শুরু করে। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে এলো এডিসির বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের আই এস।
আশারামবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলির প্রতিবাদে উত্তাল সীমান্তগ্রাম — তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে খুলল তালা।”
আজকের প্রধান সংবাদের শিরোনাম ছিল খোয়াই জেলার একটি শান্তিপ্রিয় সীমান্ত গ্রাম, আশারামবাড়ি। কিন্তু আজ সেই গ্রামে বিরাজ করলো এক অনভিপ্রেত উত্তেজনা।
সকাল সাতটার ঠিক কিছু পরেই, গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে আশারামবাড়ি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়—যার অধীনে রয়েছে প্রাথমিক শাখা—সেই স্কুলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তাদের ক্ষোভ: স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ এক শিক্ষককে হঠাৎ করেই বদলি করে অন্যত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত।
এই বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে বর্তমানে পড়াশোনা করছে ১১২ জন ছাত্রছাত্রী। অথচ শিক্ষক রয়েছেন মাত্র চার জন। এরমধ্যে স্কুল ইনচার্জকেও বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসার হিসাবে প্রশাসনিক দায়িত্বে রাখা হয়েছে, যার ফলে শিক্ষাদানের কাজে তার সম্পূর্ণ সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ফলে কার্যত সক্রিয় শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র তিনজন। এ অবস্থায় যদি একজন শিক্ষককেও সরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে বাকি শিক্ষার গতি যে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে — সেটাই গ্রামবাসীর প্রধান আশঙ্কা।
আমরা পৌঁছাই আশারামবাড়ি স্কুল প্রাঙ্গণে, যেখানে শতাধিক গ্রামের মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। অনেকেই বললেন, তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্যই তাঁরা এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।
এক অভিভাবক বললেন—
“একজন শিক্ষক গেলে বাচ্চাদের কী হবে? কে পড়াবে ওদের? আমরা চাই শিক্ষক থাকুন, স্কুল ঠিকঠাক চলুক।”
আরও অনেকে জানান, বহু বছর ধরে শিক্ষক স্বল্পতার সমস্যায় ভুগছে এই বিদ্যালয়। বারবার জানিয়েও কোনো স্থায়ী সমাধান মেলেনি। তাই এবার প্রতিবাদের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন তাঁরা।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট কমিশনারের (ADC) অধীন বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের আইএস (Inspector of Schools)।
তিনি দীর্ঘ আলোচনা করেন স্থানীয়দের সঙ্গে। প্রতিশ্রুতি দেন, সমস্যাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং কোন শিক্ষক বদলি হওয়ার আগে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। এমন আশ্বাস পেয়েই স্কুল খুলে দেন গ্রামবাসীরা।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও সামনে এল সীমান্ত অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থা। শিক্ষক স্বল্পতা, প্রশাসনিক অবহেলা, আর অভিভাবকদের হতাশা — সব মিলিয়ে এক গভীর সংকট দেখা দিয়েছে।
Post Comment