ভারত-রাশিয়া বাণিজ্যে নতুন মাইলফলক, আমেরিকার চাপ সত্ত্বেও সম্পর্ক মজবুত*
*নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারত : প্রিয়াংকা বনিক : ১৪ মার্চ ভারত ও রাশিয়ার কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৭০.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯% বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও এই বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক বৃদ্ধিরাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত ২০২৪ সালে রাশিয়া থেকে ৬৫.৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮.৪% বেশি। অন্যদিকে, ভারত রাশিয়ায় ৪.৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, যা ২১% বৃদ্ধি পেয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত মূলত রাশিয়া থেকে তেল, সার ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করে। রাশিয়ার সঙ্গে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভারত রাশিয়ার ওপর চাপ দিচ্ছে।আমেরিকার চাপ ও ভারতের অবস্থানইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকা ভারতকে বারবার রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়ে আমেরিকা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।তবে ভারত নিজের জ্বালানি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সস্তায় রাশিয়ান তেল কিনেছে, যা অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থিতিশীল তেলের দাম বজায় রাখতে সাহায্য করেছে। বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়েছে, কারণ রাশিয়ার সস্তা তেল সরবরাহ থাকায় তেলের দাম বাড়েনি।ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতাভারত ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত নিজস্ব প্রতিরক্ষা উৎপাদনে জোর দিচ্ছে এবং আমেরিকা ও ফ্রান্সের সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াচ্ছে।মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক সম্প্রতি ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন, “ভারতের উচিত রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমানো এবং নতুন প্রতিরক্ষা অংশীদার খোঁজা।”ভারতের ভবিষ্যৎ কৌশলবিশ্লেষকদের মতে, ভারত তার স্বার্থ অনুযায়ী কৌশল ঠিক করছে। একদিকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে সস্তায় তেল ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নিচ্ছে, অন্যদিকে আমেরিকা ও ইউরোপের সঙ্গেও বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছে।বিশ্ব রাজনীতির এই পরিস্থিতিতে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলের নজরে থাকবে।
Post Comment