×

ফাঁসি না যাবজ্জীবন! আরজি কর খুন ও ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়।

ফাঁসি না যাবজ্জীবন! আরজি কর খুন ও ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়।

**নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা : প্রিয়াংকা বনিক : ১৮ জানুয়ারিআজ ছিল আরজি করে তরুণী চিকিত্‍সক ধর্ষণ ও খুন মামলার রায়। ফাঁসি নাকি যাবজ্জীবন, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নিয়তি কি? সঞ্জয়ের ভাগ্য ঠিক হবে বিচারকের কলমের একটি আঁচড়ে। আরজি কর নিয়ে কী রায় আদালতের? সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল শিয়ালদহ আদালত। শনিবার সকাল থেকেই বাংলা সহ গোটা দেশের নজর ছিল এই নির্দেশের দিকে। অবশেষে দীর্ঘ সওয়াল জবাব শেষে, সবার বক্তব্য শুনে সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করলেন বিচারক অনির্বাণ দাস।ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার সমস্ত মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এদিন কোনও সাজা ঘোষণা (RG Kar verdict) হয়নি। আদালত সূত্রে খবর, আগামী সোমবার এই সংক্রান্ত সাজা ঘোষণা করা হবে। তবে এদিন আদালতে দাঁড়িয়ে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেন দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়। তাহলে ঘটনা কি… সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি।শুধু জানিয়েছেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। যা বলতে বলা হয়েছিল তাই বলেছি। যদিও এই প্রসঙ্গে আদালত জানান, যে প্রমাণ সামনে এসেছে তাতে স্পষ্ট সঞ্জয় রায় আপনি দোষী। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ রায় মৃত্যুদণ্ড কিংবা সর্বনিম্ন জাব্বজিবন হতে পারে বলেও এদিন জানিয়েছেন বিচারক। তবে কি হবে তা জানতে আগামী সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।এদিন অভয়ার পরিবারের তরফে আদালতের কাছে সাজা না দেওয়ার আবেদন জানায়। আইনজীবী জানান, এই মামলায় আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে। আদালত জানতে চায়, রায় দেওয়া নিয়ে কোনও স্থগিতাদেশ আছে কিনা। যদিও তা না থাকায় শিয়ালদহ আদালত এদিন চূড়ান্ত রায় এই সংক্রান্ত ঘোষণা করা হল।আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের মামলাতে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় রায়কে। ভারতীয় ন্যায় সংহতি অর্থাৎ বিএনএসের ৬৪, ৬৬ ১০৩/১ উপধারা মামলা হয়। আর এগুলি হল – ধর্ষণ, খুন এবং আঘাতের ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই তিন ধারাতেই দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়।গত ৯ আগস্ট, ২০২৪, কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সি ডাক্তারি পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ার দিন নাইট শিফটে ছিলেন তরুণী চিকিৎসক। হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ যখন উদ্ধার করা হয়েছিল, তখন পরনের পোশাক অবিন্যস্ত অবস্থায় ছিল। সেমিনার হলে ছিল না কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা। তরুণী চিকিৎসকের দুই চোখ, মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। যৌনাঙ্গে ও গলায় ছিল ক্ষত। আঘাতের চিহ্ন ছিল মুখে, পায়ে, নখে, পেটে, হাতে, ঠোঁটে। চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণ করে খুন করার বিষয় ছিল স্পষ্ট।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল তরুণী চিকিৎসককে। ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সিবিআই এই সঞ্জয়কেই মূল অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই সঞ্জয় আজ দোষী সাব্যস্ত। তবে একা সঞ্জয়ই যুক্ত নয় বলে প্রথম থেকে দাবি নির্যাতিতার পরিবার সহ আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসদের। ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট সহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। পরবর্তীতে তদন্তকারী সংস্থা এই নিয়ে কোনো চার্জশিট দেয় কিনা সেদিকে নজর থাকবে।অবশেষে আজ রায় ঘোষণা আর জি কর কাণ্ডের (RG Kar Case)। ধৃত মূল অভিযুক্ত সিভিক সঞ্জয় রায়ের কী পরিণতি হয়, কি রায় দেয় আদালত সেদিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। অবশেষে দোষী সাব্যস্ত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। রায় দিলেন বিচারক অনির্বাণ দাস (Judge Anirban Das)।সাজা ঘোষণা সোমবার।ধর্ষণ ও খুনের ধারায় দোষী সাব্যস্ত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন। এদিনও সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। তিনি আরও বলেন, ‘স্যার আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে। ধস্তাধস্তি হলে মালাটা ছিঁড়ে যেত, সেটা ছিঁড়ে নি। আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ওই সেমিনার রুমে আমার প্রবেশ করা সম্ভব নয়।আইপিএস অফিসাররা যা বলেছে তাই বলেছি। ‘ ১২ মিনিটের শুনানিতে কাতর আর্জি সঞ্জয়ের।এদিন সঞ্জয় রায়কে উদ্দেশ্য করে বিচারক বলেন, ওই চিকিৎসকে গলা টিপে খুন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে আপনার বিরুদ্ধে। সমস্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আর জি কর ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় রায় ঘোষণা করল আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় সাজা ঘোষণা করবে আদালত। ওই দিন সঞ্জয়কে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।

Post Comment

You May Have Missed