ধর্মনগরে কালি পূজো দেখতে গিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষের হাতে গুরুতরভাবে আক্রান্ত দুই দম্পতি*
নিজস্ব প্রতিনিধি : ধর্মনগর, প্রিয়াংকা বনিক, ৩ নভেম্বর।।
দূর্গা পূজার চাঁদা সংগ্রহকে কেন্দ্র করে উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলায় ঘটে যাওয়া বিক্ষিপ্ত ঘটনায় ক্ষত এখনো পুরোপুরি মুছে যায়নি,তার মাঝে এবার কালি পূজো দেখতে গিয়ে ধর্মনগর শহরের পূর্ব বাজার স্হীত মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাব সদস্যদের হাতে গুরুতর ভাবে আক্রান্ত দুই দম্পতি।পরে দমকলকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়,সাথে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে শনিবার রাত পৌনে বারোটা নাগাদ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,কালী পূজো মানেই উত্তরের ধর্মনগর শহরের পূজো।আর ধর্মনগরের কালী পূজো দেখতে গোটা রাজ্য সহ বহিঃ রাজ্য থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন।চলে পাঁচ দিনব্যাপী। এদিকে শনিবার রাতে দক্ষিণ হুরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বারো নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নির্মল মালাকার তার স্ত্রী সহ তার ছোট ভাই নিখিল মালাকার ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে ধর্মনগর শহরে কালি পূজো দেখতে যান। অনান্য পূজো প্যান্ডেল দেখে শহরের পূর্ব বাজার স্হীত মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাবের পূজো দেখতে গেলে দর্শনার্থীদের প্রচন্ড ভিড়ে মহিলা পুরুষদের সাথে তাদেরকেও আলাদা ভাবে লাইনে দাঁড়াতে হয়।তখন তাদের পরিবারের একটি ছোট বাচ্চাকে ক্লাব কর্তৃপক্ষ লাইন থেকে ছেড়ে ক্লাবের ভেতরের পূজো দেখার ছাড় দেয়।তখন নির্মল মালাকার সহ তাঁর পরিবারের লোকজনরা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানান,বাচ্চাটি ছোট তাই তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে যেন লাইন থেকে বাচ্চাটির কাছে অর্থাৎ ভেতরে যেতে দেন। এনিয়ে প্রথমে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডা ও পরে নির্মল মালাকারের উপর দলবদ্ধ আক্রমণ শুরু করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ। ভাইয়ের উপর আক্রমণ হচ্ছে দেখে ছোট ভাই নিখিল মালাকার এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।পরে দুই ভাইয়ের স্ত্রী স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে এলে তাদেরকেও মারপিট করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ,পনেরো থেকে কুড়ি জন ক্লাব সদস লাটি বাঁশ কোমড়ের বেল্ট ও পাথর দিয়ে দুই ভাই ও তাদের স্ত্রীদের প্রচন্ডভাবে মারধর করে বলে অভিযোগ। এদিকে কোনমতে আহতরা দৌড়ে পাশে থাকা অপর একটি কালী পূজো নবরুপ সংঘের পূজো মন্ডপে গেলে তারা প্রানে রক্ষা পান।পরে স্থানীয়রা ধর্মনগর দমকল অফিসে খবর দিলে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের চিকিৎসা শুরু করেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা,ধর্মনগর থানার ওসি হিমাদ্রী সরকার বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী নিয়ে মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাবে ছুটে গিয়ে এদিনের পূজোর সকল অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। এদিকে আহতরা জানান,কালী পূজো দেখতে গিয়ে যেভাবে তাদের পরিবার ক্লাব কর্তৃপক্ষের মারধরে আহত হয়েছেন এভাবে যেন আর কোন দর্শনার্থীরা আক্রান্ত হতে না হয় তারজন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছেন আহতরা।অপরদিকে স্হানীয় থানার পুলিশ গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি দাবি উঠছে, পুলিশ প্রশাসনের তরফে মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাবের পূজো প্যান্ডেল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেবার জন্য। অন্যথায় কদমতলার বিক্ষিপ্ত ঘটনার মতো ঘটনা ধর্মনগর শহরেও ঘটতে পারে। তাছাড়া, বিভিন্ন ক্লাবের পূজো প্যান্ডেলের পাশে থাকা আনন্দ মেলার আড়ালে চলছে ঝান্ডি মুন্ডা জোয়ার আসর।সেদিকেও যেন পুলিশ প্রশাসন সজাগ দৃষ্টি রাখে।নতুবা অবৈধ জোয়ার আসর থেকেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।তবে স্বাভাবিকভাবেই মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাবের এহেন আচরণে ধর্মনগর শহরের কালী পূজোর দীর্ঘদিনের গরিমা খানিকটা হলেও ভূলুণ্ঠিত হল।
Post Comment