ফের ফিরে এল করমন্ডলের স্মৃতি! চেন্নাইয়ে মালগাড়িতে ধাক্কা এক্সপ্রেসের*
নিজস্ব প্রতিনিধি : তামিলনাড়ু :প্রিয়াংকা বনিক : ১২ অক্টোবর
প্রবল ধাক্কায় দুটি কোচে আগুল লাগার পাশাপাশি আরও দুটি কোচ বেলাইন হয়ে যায়। বহু যাত্রী আহত তবে এখনওপর্যন্ত কোনও যাত্রীর মৃত্যুর কোনও খবর নেই। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সন্ধে ৮.৫০ নাগাদ মাইসুরু-দ্বারভাঙা এক্সপ্রেসের সঙ্গে একটি মালগাড়ির সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে ছুটি গিয়েছে উদ্ধারকারী দল।তামিলনাড়ুর রেল দূর্ঘটনার স্মৃতি মনে করিয়ে দিল বাহানাগায় করমন্ডল এক্সপ্রেস দূর্ঘটনাকে। তবে সৌভাগ্যক্রমে বাহানাগার মতো হতাহত ঘটনা ঘটেনি তামিলনাড়ুতে। আর তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রেল আধিকারিকরা ধন্যবাদ জানাচ্ছেন এল এইচ বি কোচকে।কামড়া দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া। এক বগির উপরে অন্য বগি উঠে যাওয়ার ছবি দেখা গেলেও।দূর্ঘটনার অভিঘাত অনেকটাই কম। যার জেরে প্রাণহানি রুখে দিতে পারা গিয়েছে।এলএইচবি কোচের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হল, এই কোচ অ্যান্টি রোল, অ্যান্টি কোলাপ্স এবং অ্যান্টি টেলিস্কোপিক। মাইল্ড স্টিল দিয়ে তৈরি হওয়ায় আইসিএফের থেকে ওজনে সাধারণ কোচের চেয়ে অনেকটাই হাল্কা এই ধরনের কোচ।রাজধানী-সহ অধিকাংশ প্রথম সারির ট্রেনে এখন এলএইচবি কোচ ব্যবহৃত হয়। এলএইচবি-র পুরো নাম লিঙ্ক হফম্যান বুশ। এই ধরনের কোচ আইসিএফের থেকে অনেক বেশি উন্নত। এতে ট্রেন যাত্রাও অনেক আরামদায়ক। সঙ্গে ডিস্ক ব্রেক থাকায় তা দ্রুত ট্রেন থামাতে সক্ষম।এলএইচবি কোচ বিশিষ্ট এক্সপ্রেস ট্রেন আইসিএফের তুলনায় দ্রুত গতিতে ছুটতে সক্ষম। আইসিএফের তুলনায় এই কোচের দুলুনি অনেকটাই কম হয়। আইসিএফ কোচে বসে থাকলে ট্রেন চলার সময় অনেক বেশি দুলুনি অনুভব হত। কিন্তু এলএইচবি-র ক্ষেত্রে তা অনেক কম।
পাশাপাশি ট্রেন চলার সময় এই ধরনের কোচে আওয়াজও কম হয়। এর পাশাপাশি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য এলএইচবি কোচ দুর্ঘটনার সময় কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতীতে বিভিন্ন ট্রেন দুর্ঘটনার সময় আমরা দেখেছি ট্রেনের এক কামরার উপর একটি কামরা চেপে যেতে।মূলত আইসিএফ কোচে ট্রেনে দুর্ঘটনার সময় এই ঘটনা দেখা যায়। এর জেরে ক্ষতি হয় বেশি। প্রাণহানির আশঙ্কাও বাড়ে। কিন্তু বিশেষ এলএইচবি কোচে এই সমস্যা দেখা যায় না। এই কোচের ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও তা আড়াআড়ি ভাবে লাইনচ্যুত হয়। এর জেরে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা কিছুটা হলেও কম হয়।দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধারকাজও এতে সহজ হয়। এখনও যে সমস্ত ট্রেনে আইসিএফ কোচ রয়ে গিয়েছে আগামী দিনে সেগুলির পরিবর্তে এলএইচবি কোচ ব্যবহার করবে রেল।প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে ভুল লাইনে ঢুকে পড়ে আপ ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এই মারাত্মক ভুলের কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এই লুপ লাইনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসটা না ঢুকলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। এই পরিস্থিতিতে অটোমেটিক ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল না বলে দাবি উঠছে। পাশাপাশি জেনে বুঝেই ম্যানুয়ালি এই ব্যবস্থাকে বাইপাস করা হয়েছে বলেও দাবি উঠেছে।
Post Comment