×

ভারত অভিশাপ না আশীর্বাদ?জাতিসংঘে দুটি মানচিত্র দেখালেন নেতানিয়াহু*

ভারত অভিশাপ না আশীর্বাদ?জাতিসংঘে দুটি মানচিত্র দেখালেন নেতানিয়াহু*

নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রিয়াংকা বনিক : ২৮ সেপ্টেম্বর ভারত, সুদান, মিশর, সৌদি আরবের মতো দেশ ‘আশীর্বাদ’। অন্যদিকে ‘অভিশাপ’ হল ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের মতো দেশ। এভাবেই নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে দুটি মানচিত্র তুলে ধরলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তবে তাঁর দেখানো কোনও মানচিত্রেই প্যালেস্টাইনের অস্তিত্বই ছিল না।ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মধ্যপ্রাচ্যের দুটি মানচিত্র দেখিয়েছেন। কিন্তু এর কোনোটিতেই ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব ছিল না। মানচিত্রের একটিতে কিছু দেশকে ‘আশীর্বাদ’ এবং কিছু দেশকে অভিশাপ হিসেবে চিত্রিত করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর ডান হাতে কালো রঙে চিত্রিত বেশ কয়েকটি দেশ দেখান। যেগুলোকে ‘অভিশপ্ত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই দেশগুলো হলো—ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন। শুক্রবার নেতানিয়াহুর হাতে থাকা দুটি মানচিত্রের একটিতে কালো রঙে চিহ্নিত করা ছিল মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ। উপরে লেখা ‘দ্য কার্স’। অন্য মানচিত্রে ‘দ্য ব্লেসিং’ লিখে সবুজ রঙে চিহ্নিত করা ছিল কয়েকটি দেশ। স্বাভাবিক ভাবেই নেতানিয়াহুর কাছে ‘অভিশাপ’ হয়ে ওঠা দেশের অন্যতম ইরান। তবে ভারত রয়েছে বন্ধুর তালিকাতেই।তাঁর ভাষণে তিনি ইরানকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, ”আমাদের উপরে ওরা হামলা চালালে আমরাও চালাব।” তিনি ভাষণ দেওয়ার সময় বহু কূটনীতিককেই দেখা যায় ওয়াক আউট করতে। লেবানন ও গাজায় ইজরায়েলি আক্রমণ প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, এই দুই হামলাই ‘প্রয়োজনীয়’ ছিল। হেজবোল্লার প্রতি তাঁর হুঁশিয়ারি, ”হেজবোল্লা যতক্ষণ যুদ্ধের পথে হাঁটবে, ইজরায়েলের পক্ষেও সেই হুমকিকে অপসারিত করতে এছাড়া উপায় নেই।”নেতানিয়াহুর রাষ্ট্রসংঘে ভারতকে ‘আশীর্বাদ’ বলে উল্লেখ করাকেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সঙ্গে ইজরায়েলের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে আরও বেশি। বিশেষত প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তিতে। তবে প্যালেস্টাইনকেও বরাবরই সমর্থন করে এসেছে নয়াদিল্লি। এদিকে বলে রাখা ভালো, ইহুদি দেশটির ‘মারে’ কোণঠাসা প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে খুঁজে খুঁজে নিকেশ করা হচ্ছে জেহাদিদের। গাজায় যুদ্ধ থামানোর জন্য মধ্যস্থতা করছে সৌদি আরব, মিশর, কাতারের মতো দেশ। উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকাও। কিন্তু এখনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি।নেতানিয়াহুর বাঁ হাতে থাকা মানচিত্রে সবুজ রঙে কিছু দেশকে চিত্রিত করা হয়েছে। এই দেশগুলোকে ‘আশীর্বাদ’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

এই মানচিত্রের দেশগুলো হলো—মিসর, সৌদি আরব ও সুদান। এমনকি মানচিত্রে ভারতকেও নির্দেশ করা হয়েছে এবং দেশটির আংশিক মানচিত্র আঁকা হয়েছে সবুজ রঙে।আশঙ্কার বিষয় হলো, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ‘অভিশপ্ত’ ও ‘আশীর্বাদতুল্য’ যে দেশ চিহ্নিত দুটি মানচিত্র দেখিয়েছেন, তার একটিতেও ফিলিস্তিনের নাম নেই। যেন অস্তিত্বই নেই। তাঁর দেখানো মানচিত্র থেকে ফিলিস্তিন যেন বেমালুম গায়েব হয়ে গেছে।সবুজ রঙে চিহ্নিত দেশগুলো—যার মধ্যে রয়েছে মিসর, সুদান ও সৌদি আরব। এই দেশগুলো মূলত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে কিংবা সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে আছে। সোজা কথায়, এই দেশগুলো ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ নয়।

Post Comment