ত্রিপুরায় উদ্বেগজনক এইচআইভি পরিস্থিতি, প্রতি মাসে আক্রান্ত হচ্ছেন ১২০ জন – মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা
বৃহস্পতিবারআজ ত্রিপুরা বিধানসভার লবিতে আয়োজিত এক বিশেষ সচেতনতা কর্মসূচিতে উঠে এলো রাজ্যের এইডস পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও মতামত।ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির উদ্যোগে ‘ত্রিপুরা লেজিসলেটিভ ফোরাম অন এইডস’-এর সদস্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই এইচআইভি/এইডস সেনসিটাইজেশন কর্মসূচি।অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা।উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, চিফ হুইপ কল্যাণী রায়, মন্ত্রী রতনলাল নাথসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিধায়কগণ।কংগ্রেসের তরফে উপস্থিত ছিলেন সুদীপ রায় বর্মন, গোপাল রায় এবং বীরজিৎ সিনহা।
বক্তৃতার গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি:
🔹 সুদীপ রায় বর্মন দাবি জানান, স্কুল শিক্ষায় ক্লাস ৮ থেকে ১২ পর্যন্ত সেক্স এডুকেশন ও ড্রাগ এডুকেশন অন্তর্ভুক্ত করা হোক।তিনি আরও প্রস্তাব দেন, এইডস প্রতিরোধে বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা করে খরচ করা হোক এবং খেলাধুলার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো হোক।হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বাধ্যতামূলকভাবে এইচআইভি পরীক্ষা করানোর দাবিও জানান তিনি।
🔹 গোপাল রায় প্রশ্ন তোলেন, জাতীয় গড়ের তুলনায় ত্রিপুরায় এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বেশি কেন?তিনি এইডস কন্ট্রোল সোসাইটিতে যোগ্য স্থায়ী অধিকর্তা নিয়োগের দাবি জানান এবং বর্তমান অধিকর্তার দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
🔹 রামপদ জামাতিয়া প্রস্তাব দেন, বিয়ের আগে বর-কনের বাধ্যতামূলক এইচআইভি টেস্ট চালু করা হোক।
🔹 মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, স্ব-সহায়তা দলের সদস্যদের এই সচেতনতা কার্যক্রমে যুক্ত করা উচিত।
🔹 মন্ত্রী রতনলাল নাথ প্রস্তাব দেন, প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি অনুষ্ঠানে অন্তত পাঁচ মিনিট এইডস সচেতনতা নিয়ে আলোচনা করা হোক।🗣️ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য:সমাপনী বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেন, এইডস প্রতিরোধে সাহসিকতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।তিনি জানান, সচেতনতার অভাবেই সংক্রমণ বাড়ছে।তিনি বিধায়ক তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা করে ফান্ড গঠনের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন।সেক্স এডুকেশন ও ড্রাগ এডুকেশন শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।তবে, রোগীর সম্মতি ছাড়া হাসপাতালগুলোতে এইচআইভি টেস্ট বাধ্যতামূলক করা নিয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরায় বর্তমানে পাঁচ হাজারেরও বেশি এইডস আক্রান্ত রোগী রয়েছেন।প্রতিমাসে ১২০ জন নতুনভাবে এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণে ত্রিপুরা এখন পঞ্চম স্থানে রয়েছে। নারীদের মধ্যেও এইডস সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
Post Comment