আগরতলা পুর নিগমের ইউকো ব্যাঙ্কে চেক জালিয়াতির ঘটনায় রাজ্যবাসীর মন যখন ক্ষুব্ধ, ঠিক তখনই সামনে এল আরেকটি বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি। ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অভয়নগর মুল শাখা থেকে আড়াই কোটি টাকারও বেশি ঋণ প্রতারণার অভিযোগ উঠে এসেছে, যা রাজ্যের আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ওই শাখার এক মহিলা ম্যানেজার নাকি **জাল নথি যাচাই না করেই ঋণ অনুমোদন করতেন, এমনকি কমিশনের বিনিময়ে এই অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। নিয়মিত অডিটে সন্দেহজনক লেনদেন ধরা পড়তেই প্রথমে তাকে সাসপেন্ড করা হয় এবং পরবর্তীতে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।এনসিসি থানায় ৭০/২০২৫ নম্বর মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিলের মধ্যে মোট ১৯ জন ব্যক্তি জাল প্যান ও নকল পে-স্লিপ ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ তুলেছেন। অভিযুক্তদের বেশিরভাগই কোনো সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত নন, যদিও কিছু সরকারি কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতাও প্রকাশ পেয়েছে।থানার ওসি প্রজিৎ মালাকার জানান, তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত ব্যাঙ্কে টাকাও ফেরত দিতে শুরু করেছেন। প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহের পর পুলিশ গ্রেপ্তারি পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি জানান।এদিকে, ধারাবাহিকভাবে রাজ্যে একের পর এক প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায় সাধারণ নাগরিকেরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন। আগরতলা ক্রাইম ব্রাঞ্চ যেখানে ইতোমধ্যেই ইউকো ব্যাঙ্কের চেক জালিয়াতিসহ একাধিক বড় মামলার তদন্তে ব্যস্ত, সেখানে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের এই নতুন কেলেঙ্কারি তাদের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।জানা গেছে, অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন—এডি নগরের বাপন সাহা, শ্রীনগরের রণজিৎ মজুমদার, যোগেন্দ্রনগরের সুমন সাহা, রাঙ্গুটিয়ার লিটন সরকার,টাকারজলার বিষ্ণু দেববর্মা, ধলেশ্বরের সৌমেন বনিক—সহ আরও অনেকে। তাদের থানায় হাজিরার নোটিশ পাঠানো হলেও অনেকেই নাকি জানেনই না, তাদের নামে ঋণ তোলা হয়েছে।সমগ্র ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে আগরতলা ও আশেপাশের এলাকায়। সাধারণ মানুষের দাবি—দ্রুত সম্পূর্ণ তদন্ত ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।