রাজ্যের রেলপথ ব্যবহার করে মাদক পাচার বেড়ে চলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ত্রিপুরা প্রদেশ যুব কংগ্রেস। সংগঠনের সভাপতি নীল কমল সাহা রবিবার কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের উদ্দেশে এক চিঠি পাঠিয়ে এই বিষয়ে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় তদন্তের দাবি জানান।চিঠিতে যুব কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন রেলস্টেশন দিয়ে বিপুল পরিমাণ হেরোইন, ইয়াবা, ও কফ সিরাপসহ নানা মাদক দ্রব্য পাচার হচ্ছে। পুলিশ কয়েকটি চালান আটক করলেও এখনো পর্যন্ত কোনো মূলচক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করা যায়নি। সংগঠনের দাবি, এই ঘটনাগুলি শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতাই নয়, রাজনৈতিক প্রভাবেরও ফল।উদাহরণ হিসেবে সাহা উল্লেখ করেছেন, সম্প্রতি জিরানিয়া রেলস্টেশনে দুটি পূর্ণ বগি ভর্তি ফেনসিডিল বাজেয়াপ্ত করা হলেও কাউকে আটক করা হয়নি। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, “যেদিন ত্রিপুরায় রেলপথ চালু হয়েছিল, সেটি ছিল উন্নয়নের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কিন্তু আজ সেই একই রেলপথ মাদক পাচারের করিডরে পরিণত হয়েছে।”যুব কংগ্রেসের মতে, মাদক পাচারের এই নেটওয়ার্ক রাজ্যের যুবসমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। নীল কমল সাহা অভিযোগ করেন, রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং শাসক দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্রয়ে এই চক্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এমনকি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও রাজনৈতিক চাপের কারণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারছে না বলে দাবি সংগঠনের।চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে রেলের মাধ্যমে মাদক পাচার প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ত্রিপুরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে মাদক পাচারের এক গুরুত্বপূর্ণ করিডরে পরিণত হয়েছে। যুব কংগ্রেসের বক্তব্য, যদি এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে রেলপথের সুনাম ও রাজ্যের সামাজিক কাঠামো দুটোই বড় বিপদের মুখে পড়বে।এই পরিস্থিতিতে যুব কংগ্রেস রেলমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে দ্রুত তদন্ত শুরু করা হোক এবং মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। পাশাপাশি, রেলপথে কড়া নজরদারি বাড়ানো, আধুনিক স্ক্যানার বসানো ও বিশেষ টহলদারি চালুরও প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।যুব কংগ্রেসের এই পদক্ষেপে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় তদন্ত শুরু হলে ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হতে পারে।