পুনরায় জাতীয় স্তরে উজ্জ্বল সাফল্য অর্জন করল উত্তর ত্রিপুরা জেলা। জল সংরক্ষণে জনঅংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে কেন্দ্র সরকারের পরিচালিত জল সঞ্চয় জনভাগীদারি ক্যাম্পেইন-এ উত্তর–পূর্ব ও পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে সেরা জেলা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে উত্তর ত্রিপুরা। দেশের সর্বোচ্চ সম্মানজনক এই স্বীকৃতি গ্রহণ করেছেন জেলার প্রতিনিধিরা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে।
১৮ নভেম্বর নয়া দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে—এই চার মাসে উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১১ হাজারেরও বেশি জল সংরক্ষণ কাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। জলধার পুনর্জীবন, বৃষ্টির জল ধরে রাখা, কৃষিভিত্তিক জল ব্যবস্থাপনা এবং জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে জেলাটি যে দক্ষতার সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কাছেও দৃষ্টান্তস্বরূপ।
এই অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে উত্তর ত্রিপুরা জেলাকে দেওয়া হয়েছে ২ কোটি টাকার পুরস্কার। এই অর্থ ভবিষ্যতে জল সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যয় হবে বলে জানা গেছে। কর্মকর্তারা জানান, জেলার প্রশাসন, পঞ্চায়েত, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই এত অল্প সময়ে এত বৃহৎ জল সংরক্ষণ কাঠামো নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
জল সংরক্ষণকে জনআন্দোলনে পরিণত করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। প্রতিটি গ্রাম, পঞ্চায়েত ও শহরাঞ্চলে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বাস্তবিক কাজের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছিল। ফলে নদী, খাল, পুকুর, চেক-ড্যাম, কন্টুর ট্রেঞ্চ সহ বহুমুখী জল সংরক্ষণ প্রকল্প দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হয়।
জাতীয় পর্যায়ে এই সম্মান উত্তর ত্রিপুরাকে আরও উৎসাহিত করেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী দিনে আরও বৃহত্তর পরিসরে জল সংরক্ষণ কার্যক্রম চালানো হবে, যাতে রাজ্যব্যাপী পানীয়জল সংকট মোকাবিলা ও ভূগর্ভস্থ জলের স্তর পুনরুদ্ধারে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া যায়।
এই সম্মান অর্জন উত্তর ত্রিপুরা জেলার জন্য যেমন গৌরবের, তেমনি রাজ্যের জন্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জল সংরক্ষণে এই সাফল্য ভবিষ্যতের উন্নয়ন পরিকল্পনার পথ আরও সুগম করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।