আগরতলার লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে অম্বুবাচী উপলক্ষে নারীদের সিঁদুর উৎসব
২৩ জুন ২০২৫: অম্বুবাচী উৎসবের আবহে ত্রিপুরার আগরতলার ঐতিহ্যবাহী লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে সোমবার অনুষ্ঠিত হল এক ব্যতিক্রমী সিঁদুর উৎসব। উৎসবে অংশ নিলেন শতাধিক বিবাহিত নারী, যারা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করেন।ধর্মীয় ও সামাজিক মিলনের এই পর্বটি অম্বুবাচী উৎসবের এক বিশেষ মাত্রা তৈরি করেছে।অম্বুবাচী উৎসবের তাৎপর্যঅম্বুবাচী, যা হিন্দু শাস্ত্রমতে ধরিত্রী মাতার ঋতুকাল হিসেবে বিবেচিত, প্রতিবছর আষাঢ় মাসে পালিত হয়। এই সময় তিন দিন ধরে মঠ-মন্দিরে পূজার্চনা বন্ধ থাকে, বিবাহ বা গৃহপ্রবেশের মতো শুভ কাজও নিষিদ্ধ থাকে।২০২৫ সালে অম্বুবাচী তিথি শুরু হয়েছে ২২ জুন দুপুর ২:৫৭-এ এবং শেষ হবে ২৫ জুন রাত ৩:২১ মিনিটে।বিশ্বাস করা হয়, এই তিন দিন ধরিত্রী মা বিশ্রামে থাকেন — প্রজননের প্রস্তুতিতে। তাই এই সময় প্রকৃতি ও নারীর জীবনের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক স্মরণ করা হয়।ঐতিহ্য ও নারীর সম্মানলক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ির এই উৎসব শুধু ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং নারীত্বের সম্মান ও সামাজিক বন্ধনের এক অনন্য প্রতীক। উৎসবে অংশগ্রহণকারী অনেকে জানান, ‘‘এই সময়ে সিঁদুর দেওয়া মানে শুধু মঙ্গলকামনা নয়, বরং একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাও।’’মন্দির বন্ধ, চাষাবাদ বন্ধ — অম্বুবাচীর নিয়মাবলিউৎসব চলাকালীন বন্ধ থাকে বহু মন্দির, বিশেষত কামাখ্যা মন্দিরে এই সময় প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। চাষাবাদও বন্ধ থাকে এই বিশ্বাসে যে, ধরিত্রী মা বিশ্রামে আছেন — তাঁকে জাগানো অনুচিত।উৎসব শেষে শুভ সূচনা২৫ জুন অম্বুবাচী শেষ হলে, পুনরায় মন্দির খোলে, মাঠে নামে কৃষক, শুরু হয় বিবাহ, পূজা ও নতুন কাজকর্ম। এই ভাবনা ধর্মীয় হলেও, এর মধ্যে লুকিয়ে আছে এক গভীর পরিবেশ সচেতনতা ও সামাজিক বার্তা।
Post Comment