
ভারতের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)-এর প্রধান মোহন ভাগবতের একটি সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। নাগপুরে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “৭৫ বছর বয়সের পর নেতাদের অবসর নেওয়া উচিত। নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।”এই বক্তব্যের পরই জল্পনা শুরু হয়—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বয়স যেহেতু শীঘ্রই ৭৫ ছুঁতে চলেছে, তবে কি তিনিও এই ‘নিয়ম’-এর আওতায় পড়বেন?গড়করির নাম আসতেই চমকএই পরিস্থিতিতে নতুন বিতর্ক উস্কে দেন কর্ণাটকের কংগ্রেস বিধায়ক বেল্লুর গোপালকৃষ্ণ। তিনি সরাসরি বলেন, “মোদি যদি অবসর নেন, তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য ব্যক্তি নীতিন গড়করি।” তাঁর মতে, গড়করি একজন মাটির মানুষ, যিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছেন।তিনি আরও বলেন, “গড়করির নেতৃত্বে ভারতের সড়ক এবং মহাসড়ক ব্যবস্থা যে মাত্রায় উন্নত হয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, সাদামাটা জীবনযাপন এবং জনসংযোগের ক্ষমতা তাঁকে এই পদে উপযুক্ত করে তোলে।”বিজেপির মধ্যে ‘দ্বৈত নীতি’র অভিযোগবেল্লুর গোপালকৃষ্ণ BJP-র অতীতের একটি ঘটনার কথাও টেনে আনেন। কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি.এস. ইয়েদুরাপ্পা ৭৫ বছর পূর্ণ করার পর BJP তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল। তিনি বলেন, “তখন ইয়েদুরাপ্পার চোখে জল ছিল। অথচ মোদি যখন সেই বয়সের কাছাকাছি, তখন BJP-র নীরবতা কেন?”এই মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি BJP-র ভিতরে একটি সম্ভাব্য দ্বৈত নীতির দিকেই ইঙ্গিত করে। আর সেই সুযোগেই বিরোধী দলগুলি এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে তুলছে।রাজনৈতিক বার্তা নাকি কৌশলী চাল?নীতি নির্ধারণের স্তরে ভাগবতের মন্তব্য নিছক মতামত, না কি এটি একটি কৌশলী বার্তা—এই নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মতবিরোধে। তবে এটুকু স্পষ্ট, নীতিন গড়করির নাম সামনে আসা এবং গোপালকৃষ্ণের মতো নেতার সরব হওয়া এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের আভাস দিচ্ছে।